কৃষকের বোবা কান্না... অতপর আপনার করণীয়:--
ধান-চাল, শাক-সবজির দাম একটু বাড়লে সকল মিডিয়ায় খবরের হেড লাইন থাকে "বাজারে আগুন"। যেটা কৃষি সামগ্রী, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ, নির্মাণসামগ্রী, পোষাক কিংবা অন্য কোন দ্রব্যের ক্ষেত্রে অথবা চাকুরিজীবি বা শ্রমিকের পারিশ্রমিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আলোচিত হয়না ।
কারণ হলো দেশে কৃষকের মোট সংখ্যার তুলনায় অন্যান্য পেশাজীবীর সংখ্যা বেশী । দ্বিতীয়ত কৃষকদের কোন সংগঠন নাই । স্পেশালি কৃষকের সমস্যা, প্র্তিকূল পরিবেশ, বাজার ব্যবস্থাপনা বা স্বার্থ রক্ষার জন্য কোন সংগঠন অথবা কোন গনমাধ্যম কাজ করেনা ।
কিছু সংগঠন, ব্যক্তি অথবা নেতারা সভা সেমিনারে কৃষকের পক্ষে দু এক বলে থাকেন বলতে হয় বলে । আদতে সমাজ থেকে রাষ্ট্র কৃষক কে শুধুই অবহেলা করে গেছে । কিভাবে দেশের কৃষি এবং কৃষক বাঁচানো যায়, প্রকৃতপক্ষে সে চিন্তা কারো নাই ।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও কৃষকের জন্য কোন দৃশ্যমান নীতিমালা রাষ্ট্র উপহার দিতে পারেনি । নিশ্চয়তা দিতে পারেনি কৃষিপণ্যের নায্য বাজারমূল্যের। কৃষি ভর্তুকি ছাড়া কৃষক বাঁচানোর নেই কোন পদক্ষেপ । বরং সর্বত্র যেনো কৃষকের মরণ ফাঁদ পেতে রাখা ।
কোন সমস্যা নাই । একদিন শ্রম দিলে যদি ৫০০-৬০০ টাকা পাওয়া যায়, তাহলে কৃষি কাজ করে ধারাবাহিক লোকশান গুণে পথের ফকির হবার কি প্রয়োজন ?
এমনিতে বহু কৃষক এখন কৃষি বিমুখ । বিভিন্ন ভাবে কমে যাচ্ছে কৃষিজমি । রয়েছে প্রকৃতিক দুর্যোগ । এরপর সমাজ এবং রাষ্ট্রের অবহেলা আর উদাসিনতা । এতো সমস্যার মুখোমুখি হয়ে কৃষিকাজ করতেই হবে, এমন ভাবার কোন কারণ নাই । নিজের পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে যতোটুকু দরকার ততটুকু উতপাদন করলেই চলবে । কৃষক ভাইয়েরা, সরলতা এবং আবেগ পরিহার করে পরিবারের স্বার্থের কথা ভাবলেই, ল্যাটা চুকে যাবে ।
আর আপনারা যারা চাল, ডাল, পেয়াজ বা কৃষি পণ্যের দাম বাড়লেই "বাজারে আগুন" লেগেছে বলে গলা ফাটান, তারা বিদেশ থেকে সুলভে আমদানি করা কৃষিপণ্য খাবেন । রাষ্ট্র তো আপনাদের আওয়াজের মূল্য দিয়ে থাকে ।
কিন্ত ভুলেও কৃষকের পক্ষে আওয়াজ তুলবেন না । কৃষকদের জিম্মি করে রাখা বাজার ব্যবস্থাপনা বা মধ্যস্বত্বভোগীদের বিপক্ষে টু-শব্দটিও করবেন না প্লীজ । কারণ কৃষক মরে গেলে আপনারা বেচে যাবেন । বেচে যাবে রাষ্ট্র -- চাষা আলামিন জুয়েল ॥

মন্তব্যসমূহ