সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জৈব কৃ্ষি :

জৈব কৃষি :

ইদানিং অর্গানিক কৃ্ষি , জৈব কৃ্ষি , বিষমুক্ত কৃ্ষি নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে । আসলেই খুবই জরুরী একটা বিষয় । কারণ বিষযুক্ত কৃ্ষি পণ্য খাবার ফলে আমরা বিভিণ্ণ দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছি । ক্রমাগত পুরো জাতী বড় রকমের একটা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছি । কিন্ত এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি ?

সকলেই একটি উত্তর দিচ্ছেন, আর সেটা হলো 'জৈব কৃ্ষি ব্যবস্থা' ।

কিন্ত মজার ব্যাপার হলো, আমাদের দেশের সচেতন মহল নিজেদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ভীষণ উদ্বিগ্ন । তাই তারা নিজেরা বাঁচার জণ্য কৃষককে জৈব কৃষির পরামর্শ দিচ্ছেন । খুবই ভালো কথা ।



কিন্ত কৃষকের কথা কি ভাবছেন আপনি ? কৃষকদের মৌলিক অধিকারগুলো নিয়ে একবারও আওয়াজ তুলেছেন কি ? কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ যে উৎপাদিত পণ্যের নায্যমূল্য না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে, তাদের জণ্য কোন কার্যকরী পদক্ষেপের দাবী করেছেন কি ? নিরাপদ কৃ্ষি উৎপাদন করে কৃষক আপনার মুখে খাদ্য তুলে দেবে, সেটা অবশ্যই ঠিক আছে । কিন্ত নির্ভেজাল খাদ্য খেয়ে আপনার নিজের গর্দান খানা আরো শক্তিশালী করে কৃষকের মাথায় লাঠি চালানোর আগে একবারও কি ভেবেছেন যে , এই কৃষক মরে গেলে আপনি সাহেব কোনভাবেই বেঁচে থাকতে পারবেন না ? আপনি নিজেই একজন ভেজাল রাসায়নিক সার, ভেজাল কীটনাশকের উৎপাদনকারী। আপনি নিজেই একজন বীজ কম্পানীর মালিক , কিন্ত নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জণ্য সহজ সরল কৃষকদের ঠকিয়ে নিম্ম মানের বীজ কৃষকের হাতে তুলে দিচ্ছেন । আপনি একজন কৃ্ষি কর্মকর্তা , কৃষকের জণ্য বরাদ্ধকৃত বিভিন্ন প্রজেক্ট এর টাকা মেরে খাচ্ছেন । আপনিই একজন রাজনৈতিক নেতা , কৃষককে বাধ্য করছেন ৪০০-৪৫০ টাকায় আপনার কছে ধান বিক্রয় করতে , আর সেই ধান আপনি একহাজার টাকা মন দরে সরকারকে সরবরাহ করছেন ।

হ্যা, অবশ্যই কৃষক আপনার জণ্য বিষমুক্ত কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করবে । কারণ কৃষকের এটা নৈতিক দায়িত্ব । কিন্ত জৈব বা নিরাপদ কৃষিতে কৃষক তখনই ফিরবে , যখন কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের নায্য মূল্য পাবে । যখন আপনিও আপনার নৈতিক দায়িত্বটুকু যথাযথ ভাবে পালন করবেন । নয়তো প্রাকৃতিক দূর্যোগ সহ আপনাদের হাতে গড়া হাজারো দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার বাধা পেরোনোর ক্ষমতা সরল কৃষকদের নেই । আর তাই এসকল স্লোগান কখনই সফলতার মুখ দেখবে না । পেটে যদি ভাত থাকে, তখনই কৃষক ভালো মন্দ বুঝতে সক্ষম হবে । এখন তো দুবেলা ভাতই জোটে না । কৃষকের ঘরে ঘরে হাহাকার, অভাব অনটন। মাথায় ঋণের বোঝা। স্ত্রী, সন্তানের চোখে পানি। কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ এগুলো কৃষকের মাথায় এখন ঢোকাবেন কি করে ?

অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক নিজেই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে , সেটা আজকের কৃষক ভালো করেই বোঝে । কিন্ত তাতে লাভ নাই । ভেজাল কীটনাশক সঠিক কাজ করছে না । ফসল রক্ষায় বাধ্য হয়েই অবিবেচক হতে হচ্ছে কৃষকের। আর তখনই মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করছে । কৃষকের ভাগ্যলিপিই যেনো এমন। এমনিই মরবে , অমনিও মরবে ।

তবে তাতে কার কি আসে যায় ? বরং কৃষক মারলেই সকলের শান্তি । কৃষক না থাকলে কৃষিজমি গুলোতে মিল, ইন্ডাস্ট্রি, শপিংমল দিয়ে ভরে ফেলতে পারবেন । তাই আরো কতো পন্থায় কৃষকের ক্ষতি করা যায় বা কৃষকের মৃত্যুর ব্যবস্থা করা যায় , সেই ফন্দি আঁটুন ॥ --- চাষা আলামিন জুয়েল ॥

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...