সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কীটনাশকে আসক্তি ভ্রমরের :


কীটনাশকে আসক্তি ভ্রমরের :
কীটনাশকযুক্ত খাবারের সংস্পর্শে এলে এর প্রতি আসক্তি বাড়ে ভ্রমরের। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, কীটনাশকের প্রতি ভ্রমরের এ আসক্তি অনেকটা মাদকাসক্তির মতোই দিন দিন বাড়তে থাকে।

ভ্রমর

ভ্রমরের আচরণসংক্রান্ত ওই গবেষণায় দেখা গেছে, পতঙ্গটির ওপর কীটনাশকের বিষাক্ত প্রভাব আগে যতটা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি। বিশেষ করে ভ্রমরের প্রজনন হারের ওপর এর প্রভাব মারাত্মক নেতিবাচক।
ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির গবেষকদের ওই যৌথ গবেষণার ফল প্রকাশ হয়েছে ‘প্রসিডিংস অব দ্য রয়েল সোসাইটি বি’ জার্নালে। বাসিন্দাদের কীটনাশকযুক্ত খাবার খাওয়ার সুযোগ রয়েছে, এমন একদল ভ্রমরের কলোনির ওপর পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এ গবেষণা চালান বিশেষজ্ঞরা।
এক্ষেত্রে বিতর্কিত ‘নিওনিকোটিনয়েডস’ শ্রেণীর কীটনাশক ব্যবহার করেন গবেষকরা। বিশ্বব্যাপী এ শ্রেণীর কীটনাশকই সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। বর্তমানে এর ওপর ইইউর প্রায় সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলেও এর ব্যবহার কমানো সম্ভব হয়নি।
ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ডিপার্টমেন্ট অব লাইফ সায়েন্সেসের বিশেষজ্ঞ ড. রিচার্ড গিলের নেতৃত্বে এ গবেষণা পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, উপায় থাকলে ভ্রমর সাধারণত শুরুতে নিওনিকোটিনয়েডযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলে। কিন্তু কোনো ভ্রমর যদি কয়েকবার এ উপাদানযুক্ত খাবার গ্রহণে বাধ্য হয়, তাহলে এর প্রতি ওই ভ্রমরের আসক্তি জন্মায়।
তিনি আরো বলেন, আশ্চর্যের বিষয় হলো, নিকোটিনয়েড স্তন্যপায়ী প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রের রিসেপ্টরের ওপর যে প্রভাব ফেলে, কীটপতঙ্গের ওপরও ঠিক একই প্রভাব ফেলে। আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, নিকোটিনয়েডের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে ভ্রমর এবং কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হলো, মানবদেহের ওপর নিকোটিনে আসক্তির যে প্রভাব পড়ে, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ভ্রমরের প্রতিও দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে ভ্রমরসহ মৌমাছি গোত্রীয় পতঙ্গগুলোর ওপর আরো গবেষণা চালানো উচিত।
ভ্রমরের ১০টি কলোনির ওপর ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে পর্যবেক্ষণ চালান গবেষকরা। এসব কলোনির প্রতিটিরই নিজস্ব বিচরণক্ষেত্র ছিল। এসব বিচরণক্ষেত্র থেকে তাদের নিকোটিনয়েডযুক্ত ও মুক্ত— দুই ধরনেরই খাবার সংগ্রহের সুযোগ ছিল।
বিশেষজ্ঞরা দেখতে পান, শুরুতে ভ্রমরগুলো কীটনাশকমুক্ত খাবারের প্রতিই আগ্রহ দেখায় বেশি। কিন্তু পেটে কীটনাশকযুক্ত খাবার পড়লে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতি এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয় ভ্রমরের। এমনকি পরবর্তীতে কীটনাশকমুক্ত খাবারের পর্যাপ্ততা বাড়ার পরও এসব ভ্রমর কীটনাশকযুক্ত খাবার ঠিকই খুঁজে বের করে ফেলে। এ থেকে গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, ভ্রমর খাবারে কীটনাশকের উপস্থিতি শনাক্ত করতে সক্ষম।
গবেষকদের অন্যতম ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ডিপার্টমেন্ট অব লাইফ সায়েন্সেসের ড. আন্দ্রেস আর্চি বলেন, বুনো ভ্রমরের ক্ষেত্রে কোন ধরনের খাবার সংগ্রহ করা হবে, সেটি বাছাইয়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমরা শুধু জানতে চেয়েছিলাম ভ্রমরগুলো কীটনাশক শনাক্ত করতে পারে কিনা। আমরা তাদের জন্য প্রচুর বিশুদ্ধ এবং কীটনাশকমুক্ত খাবারের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করলে তারা কীটনাশকযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে পারে কিনা, সেটিও পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের।
আন্দ্রেস আর্চির ভাষ্য অনুযায়ী, প্রথমে দেখা গেল, কীটনাশকযুক্ত খাবারকে এড়িয়ে চলছে ভ্রমরগুলো। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, এসব খাবারের কাছে পতঙ্গগুলো বারবার ফিরে আসছে। একপর্যায়ে দেখা যায়, এর প্রতি রীতিমতো আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা। এর পেছনের কারণ বের করতে হলে বিষয়টি নিয়ে আরো গভীরে গিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। তথ্য : অনলাইন ডেস্ক ॥ 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...