"কৃষি"তে নতুন-তরুণ উদ্যোগতাদের স্বাগতম, কিন্তু সাবধানে --------
মাটি, সবুজের সমারোহ, প্রকৃতি আমাদের প্রায় সকলকেই আকৃষ্ট করে । আর এই সূত্র ধরে মাটির সঙ্গে, কৃষির সঙ্গে রয়েছে আমাদের নাড়ীর সম্পর্ক । আমাদের দেশের বেশীর ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত । আবার অনেকে নতুন ভাবে কৃষিতে ঝুকছেন । এটা সত্যিই বড় প্রশান্তির,গর্বের। কিন্ত সঙ্গে সঙ্গে একটি বড় আতংক আমায় তাড়িয়ে ফেরে , সেটা হলো --নতুন কৃষি উদ্যোগতাদের অনেকেই অনভিজ্ঞ, কোনরকমের ট্রেনিং বা যাচাই -বাছাই না করেই বিনিয়োগ করে ফেলছেন . আর কিছুদিন পরেই জানা যাচ্ছে তাদের বড় রকমের লোকসানের খবর. এতে তারা নিজেরা যেমন নিরুত্সাহিত হচ্ছেন, তেমনি নতুনদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে ভীতি. আর সর্বোপরি সামগ্রিক ভাবে কৃষিতে বিনিয়োগ কমে যেতে পারে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পুরো কৃষি অর্থনীতি. আর যে কারণে আমি বার বার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছি, নতুনদের সতর্ক করার চেষ্টা করছি.
কেন এমন হচ্ছে --??
বর্তমান ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ও এগিয়েছে অনেক দূর । আর সেই সুবাদে আমরা হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছি আধুনিক/ডিজিটাল বিভিন্ন সেবা । এটার মাধ্যমে একদিকে আমরা যেমন উপকৃত হচ্ছি, তেমনি বেশ কিছু ক্ষতির দিক ও কিন্তু রয়েছে । এই প্রজুক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা কেউ কেউ শুরু করেছি " ডিজিটাল প্রতারনা" । কারন প্রতারকদের সব থেকে বড় যে গুণাবলী, তাহলো দ্রুত লেবাস পরিবর্তন করে নিজেকে নতুন রুপে উপস্থাপন করা ।
কখনো কৃষক, কখনো কৃষি পণ্য নিয়ে,কখনো কৃষি সংগঠন এর ব্যনার নিয়ে, বিভিন্ন কৃষি সেবা নিয়ে ---আরো বিভিন্ন নামে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে নতুন ওয়েবসাইট, পেইজ, গ্রুপ । এটা কিন্তু খারাপ নয় । কিন্তু বড় ভয়টা হয়ে দাঁড়ায় তখনই , যখন বিশাল প্রতারণার ফাঁদ পেতে এর পিছনে লুকিয়ে থাকে প্রতারক চক্র । তাদের বিভিন্ন আঙ্গিকে দেয়া নতুন নতুন পোস্ট মানুষকে আকৃষ্ট, লোভনীয় করে তোলে । এমনই লোভনীয় তাদের উপস্থাপনা, যাতে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে খুব দ্রুত সময়ে ভাগ্য বদলের এক অদ্ভুত স্বপ্ন তৈরি হয়ে যেতে পারে আপনার মাঝেও ।কিছু কিছু পোস্ট পরলে আপনি এতোটাই আকৃষ্ট হবেন যে, আপনার সকল চাকুরি, ব্যাবসা ছেড়ে দিয়ে শুধুই কৃষি কাজ করার ইচ্ছে তৈরি হয়ে যেতে পারে । এদের চেহারা, লেবাস এবং চমতকার উপস্থাপনা কৌশল দেখে ভালোমানুষ মনে হলেও, আসলে তা মোটেই নয়. বরং মূল উদ্দেশ্য অন্যকে ঠকিয়ে, নিজে লাভবান হওয়া. আর এমনই সব আজগুবি পোস্ট পরে নতুন-তরুণ কৃষি উদ্যোগতা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন. কিন্ত এটা কি বিনিয়োগের সঠিক পথ ? নাকি জেনে বুঝে করা উচিত ? কৃষি উদ্যোগতা হতে হলে, আগে জানতে হবে এই খাত সম্পর্কে. আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে নিচে সামান্য ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছি এই প্রয়াসে, যাতে নতুনরা কিঞ্চিত উপকৃত হন.
আসলে "কৃষি" কি ??
যারা কৃষি কাজ করেন বা কৃষির সঙ্গে জড়িত, তারা খুব ভালো করে জানেন যে, কৃষি কি বিষয় । আর তাই এসকল প্রতারকের মন ভোলানো প্রলোভনে প্রকৃত কৃষক কম প্রলোভিত/ প্রতারিত হন । কৃষিতে আসার আগে আপনাকেও জানতে হবে , কৃষি কি ? এটা কেমন পেশা ? কতোটা সহজ ? কতো বেশী লাভজনক ?
আপনি যেমন আপনার সন্তানকে আদর, যত্ন, মমতা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিল তিল করে বড় করে তুলছেন, কৃষি কাজ ঠিক তেমন । এখানে কঠোর মনঃসংযোগ, শ্রম, সময়, অর্থ যেমন প্রয়োজন, তেমনি ধৈর্য ধরে তিল তিল করে একে বড় করে তুলতে হয়। তারপরেও অনেক সময়ই কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পরেন ।
আমি কৃষি কাজে আপনাকে নিরুৎসাহিত করছি না, বরং সম্পৃক্ত হতে অনুরোধ করছি । কিন্তু সেটা বিভ্রান্ত হয়ে নয় । আপনি জেনে, বুঝে তারপর শুরু করুন । কিন্ত সেটা কি ভাবে ??
প্রথমত : আপনি কৃষিকে ভালো বাসেন, তাই কৃষিকে পেশা হিসেবে নিতে মন স্থির করেছেন এবং আপনার প্রয়োজনীয় অর্থ আছে । এ দুটি বিষয় আপনার প্রথম যোগ্যতা । এর পর আমার কথায় মুগ্ধ হয়ে শুরু করে দিলেই আপনি সফল হবেন ? মোটেই এমনটি ভাবা কোন বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ হবে না । বরং সে ক্ষেত্রে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভবনাই বেশী । তাহলে আপনি কি করবেন ?
দ্বিতীয়ত: কিছূ বিষয় সম্পর্কে আপনাকে আগেই জেনে নিতে হবে . যেমন - স্থির হয়ে ভেবে চিন্তে আপনাকেই খুজে বের করতে হবে, কৃষির কোন কাজটি আপনার জন্য সহজ । কোন কৃষি কাজটি কম ঝুকি সম্পন্ন, কোন কৃষি পণ্যটির বাজার চাহিদা ভালো এবং আপনার বিপণন ব্যাবস্থার জন্য সহজ হবে । এই ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে, বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নিন । সেটি সম্পন্ন হয়ে গেলে এবার সেই বিষয়ে অভিজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং কম - বেশী হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিন । "যুব উন্নয়ন"- উপজেলা,জেলা বা সাভার এর অফিস থেকে এসকল বিষয়ে আপনি সহযোগিতা নিতে পারেন । আর সেটা সম্ভব না হলে, যেখানে প্রাইভেট খামার রয়েছে, সেখানে অনুমতি নিয়ে ২/৩ সপ্তাহ সেচ্ছা শ্রম দিন । ( #নিচে ' যুব উন্নয়ন ' এর কর্মকান্ড নিয়ে বিস্তারিত উপস্থাপনা করার চেস্টা করবো ইনসাল্লাহ )। তাহলে আপনি হতে কলমে বাস্তব যে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, সেটা হয়ে উঠবে আপনার সব থেকে বড় পুঁজি । আর এবার আল্লাহর উপর ভরসা করে কাজ শুরু করুন । ইনশাল্লাহ আপনি বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সফল হবেন ।
#দক্ষতা অর্জন ও বেকারত্ব নিরসনে কাছেই রয়েছে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র -----
আপনি আত্মনির্ভরশীল হতে চাইলে চাই কাজ । আর সেজন্যই আমরা চাকুরী বা ব্যবসার কথা চিন্তা করি । কিন্তু সকল চাকুরীতে পূর্বাঅভিজ্ঞতা বা দক্ষতা প্রয়োজন না হলেও, ব্যবসা বা উদ্যোগতা হতে গেলে আপনাকে কিছু দক্ষতা বা জ্ঞান অর্জন করে নিতে হবে । কারন সংস্লিষ্ট কাজে দক্ষতা না থাকলে আপনার বিনিয়োগকৃত পুঁজি ঝুঁকিতে পরতে পারে । আর এই দক্ষতা অর্জনে সহযোগিতা করতে আপনার কাছেই রয়েছে ' যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণকেন্দ্র' । এখান থেকে
প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। সারা দেশে অসংখ্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পরিচালনা করছে বিভিন্ন কর্মমুখী ট্রেড কোর্স। ইতিমধ্যে এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই ঘুরিয়েছেন নিজের ভাগ্যের চাকা। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রতিটি জেলা এবং উপজেলা প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে আপনিও প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
কাদের জন্য প্রশিক্ষণ---
বাংলাদেশ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নকেন্দ্রের অধ্যক্ষ এইচ এম জিল্লুর রহমান জানান, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষ যে কেউ এসব প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারেন। তবে এর জন্য থাকতে হবে উদ্যম আর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা। প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে আগ্রহীরা ভর্তি হতে পারবেন নিজের পছন্দমতো কোর্সে। শিক্ষিত বেকার যুবকরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেই কাজের ক্ষেত্র তৈরি করে নিতে পারেন। স্ব-স্ব কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও এসব কোর্স সহায়ক।
ভর্তির যোগ্যতা---
কোর্সভেদে শিক্ষাগত যোগ্যতায় ভিন্নতা রয়েছে। পশু ও মৎস্যসম্পদ, কৃষি, বস্ত্র, তাঁত, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, প্রিন্টিং, যানবাহন মেরামত, ওয়েল্ডিং ও ফটোগ্রাফি কোর্সে পঞ্চম শ্রেণি পাস হলেই ভর্তির সুযোগ মেলে। গবাদি পশু পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন, পোশাক তৈরি, ব্লক-বাটিক, ইলেকট্রিক্যাল ও হাউজওয়্যারিং, সোয়েটার নিটিং, লিংকিং মেশিন অপারেটিং, ওভেন সুইং মেশিন অপারেটিং, মোবাইল সার্ভিসিং ও রিপেয়ারিং কোর্সে ভর্তির জন্য অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। বিউটিফিকেশন, রেফ্রিজারেশন, ইলেকট্রনিকস কোর্সে এসএসসি, মডার্ন অফিস ম্যানেজমেন্ট ও কম্পিউটার কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা এইচএসসি। প্রতি ব্যাচে ৩০ থেকে ৫০ জন ভর্তির সুযোগ পায়। কোর্স চালুর শুরুতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগাযোগ করেও জানা যায় ভর্তির সময়সূচি। সাধারণত সংক্ষিপ্ত মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমেই ভর্তির জন্য বাছাই করা হয়।
কোর্সের মেয়াদ ও ফি---
শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার জানান, প্রধানত দুই ধরনের কোর্স পরিচালিত হয়, প্রাতিষ্ঠানিক ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক। প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স এক থেকে ছয় মাস মেয়াদি। অ-প্রাতিষ্ঠানিক কোর্সগুলোর সময়কাল সাত থেকে ২১ দিন। এ ছাড়া চাহিদাভেদে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় পরিচালিত হয় ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণকোর্স। কোর্সভেদে আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় ধরনের সুযোগ রয়েছে। আবাসিক কোর্সে প্রশিক্ষণার্থীদের বিনা মূল্যে আবাসন সুবিধার পাশাপাশি খাওয়া-ভাতা বাবদ মাসে দেওয়া হয় এক হাজার ২০০ টাকা। তবে অনাবাসিকের ক্ষেত্রে এ ভাতা প্রযোজ্য নয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে প্রতিটি কোর্সেই নামমাত্র মূল্যে ভর্তি হওয়া যায়। বেশির ভাগ কোর্সেই ভর্তির জন্য প্রয়োজন হয় মাত্র ৫০ থেকে ৫০০ টাকা। কোর্সভেদে ভর্তি ফি ভিন্ন হয়। ফেরতযোগ্য জামানত হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে জমা দিতে হয় ১০০ টাকা। ছয় মাস মেয়াদি অনাবাসিক কম্পিউটার বেসিক কোর্সে এক হাজার টাকা, গ্রাফিকস কোর্সে দুই হাজার টাকা ভর্তির জন্য জমা দিতে হবে। মৎস্য চাষ, ব্লক-বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্টিং এবং ব্লক প্রিন্টিং কোর্সে ভর্তি হওয়া যাবে বিনা মূল্যে।
কোর্স শেষে ঋণের ব্যবস্থা---
প্রশিক্ষণ শেষে আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রকল্পের জন্য সহজ শর্তে যুব ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে। এক বছর মেয়াদি ঋণপ্রাপ্তির পর সফলতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ তিনবার ঋণ পাওয়া যাবে। একক ঋণের পরিমাণ প্রশিক্ষণের ধরনভেদে ২০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপভিত্তিক প্রত্যেকের পাঁচ ধাপে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে জামানতের প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ শেষে প্রাপ্ত সনদ দেখিয়ে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে।
প্রাতিষ্ঠানিক যত কোর্স---
গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি, পোশাক তৈরি, কম্পিউটার বেসিক ও গ্রাফিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড হাউস ওয়্যারিং, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং, ইলেকট্রনিকস, ব্লক প্রিন্টিং, ব্লক, বাটিক ও স্ক্রিন প্রিন্টিং, মডার্ন অফিস ম্যানেজমেন্টে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, সোয়েটার নিটিং, লিংকিং মেশিন অপারেটিং, ওভেন সুইং মেশিন অপারেটিং, হাউসকিপিংয়ে লন্ড্রি অপারেশন্স, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিস, ফুল ও সবজি চাষ, মাশরুম চাষ, নার্সারি, বাগান তৈরি ও ব্যবস্থাপনা, বীজ উৎপাদন, ফুড প্রসেসিং, বিউটিফিকেশন ও হেয়ার কাটিং, আরবি ভাষা শিক্ষা, মোবাইল সার্ভিসিং ও রিপেয়ারিং, ট্যুরিস্ট গাইড, গ্রাফিকস ডিজাইন, হস্তশিল্পসহ আছে প্রাতিষ্ঠানিক অনেক কোর্স।
অ-প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স---
পারিবারিক হাঁস-মুরগি পালন, ব্রয়লার, গরু ও ছাগল পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, পশু-পাখির খাদ্য প্রস্তুত ও বাজারজাতকরণ, পশু-পাখির রোগ ও তার প্রতিরোধ, কবুতর পালন, কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, মৌসুমি ও সমন্বিত মৎস্য চাষ, পোনা চাষ, মৎস্য হ্যাচারি, গলদা ও বাগদা চিংড়ি চাষ, শুঁটকি তৈরি ও সংরক্ষণ, বসতবাড়িতে সবজি চাষ, নার্সারি, ফুল চাষ, ফলের চাষ, কম্পোস্ট সার তৈরি, গাছের কলম তৈরি, ঔষধি গাছের চাষ, ব্লক প্রিন্টিং, বাটিক প্রিন্টিং, পোশাক তৈরি, স্ক্রিন প্রিন্টিং, স্প্রে প্রিন্টিং, মণিপুরী তাঁতশিল্প, কাগজের ব্যাগ ও ঠোঙা তৈরি, বাঁশ ও বেতের সামগ্রী তৈরি, নকশিকাঁথা তৈরি, কারু মোম তৈরি, পাটজাত পণ্য তৈরি, চামড়াজাত পণ্য তৈরি, রিকশা, সাইকেল, ভ্যান মেরামত, ফটোগ্রাফি।
যুব সংগঠকদের জন্য প্রশিক্ষণ---
ক্যাটারিং, পর্যটন ব্যবস্থাপনা ও ট্যুর গাইড, হাউসকিপিং, ফ্যাশন ডিজাইন, যুব নেতৃত্ব বিকাশ ও যুব সংগঠন ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন, যুব ও স্বাস্থ্যবিষয়ক, ফ্রন্ট ডেস্ক ম্যানেজমেন্ট, যুব উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও বিক্রয় ব্যবস্থাপনা, যুবদের আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং প্যাকেটজাতকরণ, মাশরুম চাষ, বিউটিফিকেশন, ওয়েল্ডিংয়ে রড বাইন্ডিং, উদ্যোক্তা উন্নয়ন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ---
মৌলিক প্রশিক্ষণ (৮ সপ্তাহ মেয়াদী), অর্থব্যবস্থাপনা ও নিরীক্ষা, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা, কমিউনিকেটিভ ইংলিশ লার্নিং, আচরণ ও শৃঙ্খলা, আধুনিক অফিস ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা, ঋণ ব্যবস্থাপনা, ইন্টারনেট, বেসিক কম্পিউটার, গ্রাফিকস ডিজাইন, অনলাইন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানবিষয়ক কোর্স।
অন্যান্য তথ্যের জন্য:
বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি তথ্য, কোর্সের বিস্তারিত ও ঋণসংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে।
ঠিকানা : ১০৮ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন : ৯৫৫৯৩৪৪, ৯৫৬০৭৬১।
#বন্ধু , কারো মুখরোচক কথায়, কাল্পনিক কথামালার ফাঁদে পরে বা প্রতারনার স্বীকার হয়ে নয়, বরং নিজেকে প্রস্তুত করে কৃষি কাজে আসুন । তাতে আপনি যেমন লাভবান হবেন, তেমনি লাভবান হবে দেশর কৃষি খাত তথা দেশ ।
#সকল নতুন কৃষি উদ্যোগতাদের স্বাগতম ও শুভ কামনায় -- চাষা আলামীন জুয়েল॥
মাটি, সবুজের সমারোহ, প্রকৃতি আমাদের প্রায় সকলকেই আকৃষ্ট করে । আর এই সূত্র ধরে মাটির সঙ্গে, কৃষির সঙ্গে রয়েছে আমাদের নাড়ীর সম্পর্ক । আমাদের দেশের বেশীর ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত । আবার অনেকে নতুন ভাবে কৃষিতে ঝুকছেন । এটা সত্যিই বড় প্রশান্তির,গর্বের। কিন্ত সঙ্গে সঙ্গে একটি বড় আতংক আমায় তাড়িয়ে ফেরে , সেটা হলো --নতুন কৃষি উদ্যোগতাদের অনেকেই অনভিজ্ঞ, কোনরকমের ট্রেনিং বা যাচাই -বাছাই না করেই বিনিয়োগ করে ফেলছেন . আর কিছুদিন পরেই জানা যাচ্ছে তাদের বড় রকমের লোকসানের খবর. এতে তারা নিজেরা যেমন নিরুত্সাহিত হচ্ছেন, তেমনি নতুনদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে ভীতি. আর সর্বোপরি সামগ্রিক ভাবে কৃষিতে বিনিয়োগ কমে যেতে পারে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পুরো কৃষি অর্থনীতি. আর যে কারণে আমি বার বার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছি, নতুনদের সতর্ক করার চেষ্টা করছি.
কেন এমন হচ্ছে --??
বর্তমান ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ও এগিয়েছে অনেক দূর । আর সেই সুবাদে আমরা হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছি আধুনিক/ডিজিটাল বিভিন্ন সেবা । এটার মাধ্যমে একদিকে আমরা যেমন উপকৃত হচ্ছি, তেমনি বেশ কিছু ক্ষতির দিক ও কিন্তু রয়েছে । এই প্রজুক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা কেউ কেউ শুরু করেছি " ডিজিটাল প্রতারনা" । কারন প্রতারকদের সব থেকে বড় যে গুণাবলী, তাহলো দ্রুত লেবাস পরিবর্তন করে নিজেকে নতুন রুপে উপস্থাপন করা ।
কখনো কৃষক, কখনো কৃষি পণ্য নিয়ে,কখনো কৃষি সংগঠন এর ব্যনার নিয়ে, বিভিন্ন কৃষি সেবা নিয়ে ---আরো বিভিন্ন নামে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে নতুন ওয়েবসাইট, পেইজ, গ্রুপ । এটা কিন্তু খারাপ নয় । কিন্তু বড় ভয়টা হয়ে দাঁড়ায় তখনই , যখন বিশাল প্রতারণার ফাঁদ পেতে এর পিছনে লুকিয়ে থাকে প্রতারক চক্র । তাদের বিভিন্ন আঙ্গিকে দেয়া নতুন নতুন পোস্ট মানুষকে আকৃষ্ট, লোভনীয় করে তোলে । এমনই লোভনীয় তাদের উপস্থাপনা, যাতে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে খুব দ্রুত সময়ে ভাগ্য বদলের এক অদ্ভুত স্বপ্ন তৈরি হয়ে যেতে পারে আপনার মাঝেও ।কিছু কিছু পোস্ট পরলে আপনি এতোটাই আকৃষ্ট হবেন যে, আপনার সকল চাকুরি, ব্যাবসা ছেড়ে দিয়ে শুধুই কৃষি কাজ করার ইচ্ছে তৈরি হয়ে যেতে পারে । এদের চেহারা, লেবাস এবং চমতকার উপস্থাপনা কৌশল দেখে ভালোমানুষ মনে হলেও, আসলে তা মোটেই নয়. বরং মূল উদ্দেশ্য অন্যকে ঠকিয়ে, নিজে লাভবান হওয়া. আর এমনই সব আজগুবি পোস্ট পরে নতুন-তরুণ কৃষি উদ্যোগতা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন. কিন্ত এটা কি বিনিয়োগের সঠিক পথ ? নাকি জেনে বুঝে করা উচিত ? কৃষি উদ্যোগতা হতে হলে, আগে জানতে হবে এই খাত সম্পর্কে. আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে নিচে সামান্য ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছি এই প্রয়াসে, যাতে নতুনরা কিঞ্চিত উপকৃত হন.
আসলে "কৃষি" কি ??
যারা কৃষি কাজ করেন বা কৃষির সঙ্গে জড়িত, তারা খুব ভালো করে জানেন যে, কৃষি কি বিষয় । আর তাই এসকল প্রতারকের মন ভোলানো প্রলোভনে প্রকৃত কৃষক কম প্রলোভিত/ প্রতারিত হন । কৃষিতে আসার আগে আপনাকেও জানতে হবে , কৃষি কি ? এটা কেমন পেশা ? কতোটা সহজ ? কতো বেশী লাভজনক ?
আপনি যেমন আপনার সন্তানকে আদর, যত্ন, মমতা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিল তিল করে বড় করে তুলছেন, কৃষি কাজ ঠিক তেমন । এখানে কঠোর মনঃসংযোগ, শ্রম, সময়, অর্থ যেমন প্রয়োজন, তেমনি ধৈর্য ধরে তিল তিল করে একে বড় করে তুলতে হয়। তারপরেও অনেক সময়ই কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পরেন ।
আমি কৃষি কাজে আপনাকে নিরুৎসাহিত করছি না, বরং সম্পৃক্ত হতে অনুরোধ করছি । কিন্তু সেটা বিভ্রান্ত হয়ে নয় । আপনি জেনে, বুঝে তারপর শুরু করুন । কিন্ত সেটা কি ভাবে ??
প্রথমত : আপনি কৃষিকে ভালো বাসেন, তাই কৃষিকে পেশা হিসেবে নিতে মন স্থির করেছেন এবং আপনার প্রয়োজনীয় অর্থ আছে । এ দুটি বিষয় আপনার প্রথম যোগ্যতা । এর পর আমার কথায় মুগ্ধ হয়ে শুরু করে দিলেই আপনি সফল হবেন ? মোটেই এমনটি ভাবা কোন বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ হবে না । বরং সে ক্ষেত্রে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভবনাই বেশী । তাহলে আপনি কি করবেন ?
দ্বিতীয়ত: কিছূ বিষয় সম্পর্কে আপনাকে আগেই জেনে নিতে হবে . যেমন - স্থির হয়ে ভেবে চিন্তে আপনাকেই খুজে বের করতে হবে, কৃষির কোন কাজটি আপনার জন্য সহজ । কোন কৃষি কাজটি কম ঝুকি সম্পন্ন, কোন কৃষি পণ্যটির বাজার চাহিদা ভালো এবং আপনার বিপণন ব্যাবস্থার জন্য সহজ হবে । এই ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে, বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নিন । সেটি সম্পন্ন হয়ে গেলে এবার সেই বিষয়ে অভিজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং কম - বেশী হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিন । "যুব উন্নয়ন"- উপজেলা,জেলা বা সাভার এর অফিস থেকে এসকল বিষয়ে আপনি সহযোগিতা নিতে পারেন । আর সেটা সম্ভব না হলে, যেখানে প্রাইভেট খামার রয়েছে, সেখানে অনুমতি নিয়ে ২/৩ সপ্তাহ সেচ্ছা শ্রম দিন । ( #নিচে ' যুব উন্নয়ন ' এর কর্মকান্ড নিয়ে বিস্তারিত উপস্থাপনা করার চেস্টা করবো ইনসাল্লাহ )। তাহলে আপনি হতে কলমে বাস্তব যে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, সেটা হয়ে উঠবে আপনার সব থেকে বড় পুঁজি । আর এবার আল্লাহর উপর ভরসা করে কাজ শুরু করুন । ইনশাল্লাহ আপনি বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সফল হবেন ।
#দক্ষতা অর্জন ও বেকারত্ব নিরসনে কাছেই রয়েছে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র -----
আপনি আত্মনির্ভরশীল হতে চাইলে চাই কাজ । আর সেজন্যই আমরা চাকুরী বা ব্যবসার কথা চিন্তা করি । কিন্তু সকল চাকুরীতে পূর্বাঅভিজ্ঞতা বা দক্ষতা প্রয়োজন না হলেও, ব্যবসা বা উদ্যোগতা হতে গেলে আপনাকে কিছু দক্ষতা বা জ্ঞান অর্জন করে নিতে হবে । কারন সংস্লিষ্ট কাজে দক্ষতা না থাকলে আপনার বিনিয়োগকৃত পুঁজি ঝুঁকিতে পরতে পারে । আর এই দক্ষতা অর্জনে সহযোগিতা করতে আপনার কাছেই রয়েছে ' যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণকেন্দ্র' । এখান থেকে
প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। সারা দেশে অসংখ্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পরিচালনা করছে বিভিন্ন কর্মমুখী ট্রেড কোর্স। ইতিমধ্যে এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই ঘুরিয়েছেন নিজের ভাগ্যের চাকা। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রতিটি জেলা এবং উপজেলা প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে আপনিও প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
কাদের জন্য প্রশিক্ষণ---
বাংলাদেশ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নকেন্দ্রের অধ্যক্ষ এইচ এম জিল্লুর রহমান জানান, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষ যে কেউ এসব প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারেন। তবে এর জন্য থাকতে হবে উদ্যম আর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা। প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে আগ্রহীরা ভর্তি হতে পারবেন নিজের পছন্দমতো কোর্সে। শিক্ষিত বেকার যুবকরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেই কাজের ক্ষেত্র তৈরি করে নিতে পারেন। স্ব-স্ব কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও এসব কোর্স সহায়ক।
ভর্তির যোগ্যতা---
কোর্সভেদে শিক্ষাগত যোগ্যতায় ভিন্নতা রয়েছে। পশু ও মৎস্যসম্পদ, কৃষি, বস্ত্র, তাঁত, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, প্রিন্টিং, যানবাহন মেরামত, ওয়েল্ডিং ও ফটোগ্রাফি কোর্সে পঞ্চম শ্রেণি পাস হলেই ভর্তির সুযোগ মেলে। গবাদি পশু পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন, পোশাক তৈরি, ব্লক-বাটিক, ইলেকট্রিক্যাল ও হাউজওয়্যারিং, সোয়েটার নিটিং, লিংকিং মেশিন অপারেটিং, ওভেন সুইং মেশিন অপারেটিং, মোবাইল সার্ভিসিং ও রিপেয়ারিং কোর্সে ভর্তির জন্য অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। বিউটিফিকেশন, রেফ্রিজারেশন, ইলেকট্রনিকস কোর্সে এসএসসি, মডার্ন অফিস ম্যানেজমেন্ট ও কম্পিউটার কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা এইচএসসি। প্রতি ব্যাচে ৩০ থেকে ৫০ জন ভর্তির সুযোগ পায়। কোর্স চালুর শুরুতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগাযোগ করেও জানা যায় ভর্তির সময়সূচি। সাধারণত সংক্ষিপ্ত মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমেই ভর্তির জন্য বাছাই করা হয়।
কোর্সের মেয়াদ ও ফি---
শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার জানান, প্রধানত দুই ধরনের কোর্স পরিচালিত হয়, প্রাতিষ্ঠানিক ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক। প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স এক থেকে ছয় মাস মেয়াদি। অ-প্রাতিষ্ঠানিক কোর্সগুলোর সময়কাল সাত থেকে ২১ দিন। এ ছাড়া চাহিদাভেদে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় পরিচালিত হয় ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণকোর্স। কোর্সভেদে আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় ধরনের সুযোগ রয়েছে। আবাসিক কোর্সে প্রশিক্ষণার্থীদের বিনা মূল্যে আবাসন সুবিধার পাশাপাশি খাওয়া-ভাতা বাবদ মাসে দেওয়া হয় এক হাজার ২০০ টাকা। তবে অনাবাসিকের ক্ষেত্রে এ ভাতা প্রযোজ্য নয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে প্রতিটি কোর্সেই নামমাত্র মূল্যে ভর্তি হওয়া যায়। বেশির ভাগ কোর্সেই ভর্তির জন্য প্রয়োজন হয় মাত্র ৫০ থেকে ৫০০ টাকা। কোর্সভেদে ভর্তি ফি ভিন্ন হয়। ফেরতযোগ্য জামানত হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে জমা দিতে হয় ১০০ টাকা। ছয় মাস মেয়াদি অনাবাসিক কম্পিউটার বেসিক কোর্সে এক হাজার টাকা, গ্রাফিকস কোর্সে দুই হাজার টাকা ভর্তির জন্য জমা দিতে হবে। মৎস্য চাষ, ব্লক-বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্টিং এবং ব্লক প্রিন্টিং কোর্সে ভর্তি হওয়া যাবে বিনা মূল্যে।
কোর্স শেষে ঋণের ব্যবস্থা---
প্রশিক্ষণ শেষে আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রকল্পের জন্য সহজ শর্তে যুব ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে। এক বছর মেয়াদি ঋণপ্রাপ্তির পর সফলতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ তিনবার ঋণ পাওয়া যাবে। একক ঋণের পরিমাণ প্রশিক্ষণের ধরনভেদে ২০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপভিত্তিক প্রত্যেকের পাঁচ ধাপে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে জামানতের প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ শেষে প্রাপ্ত সনদ দেখিয়ে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে।
প্রাতিষ্ঠানিক যত কোর্স---
গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি, পোশাক তৈরি, কম্পিউটার বেসিক ও গ্রাফিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড হাউস ওয়্যারিং, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং, ইলেকট্রনিকস, ব্লক প্রিন্টিং, ব্লক, বাটিক ও স্ক্রিন প্রিন্টিং, মডার্ন অফিস ম্যানেজমেন্টে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, সোয়েটার নিটিং, লিংকিং মেশিন অপারেটিং, ওভেন সুইং মেশিন অপারেটিং, হাউসকিপিংয়ে লন্ড্রি অপারেশন্স, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিস, ফুল ও সবজি চাষ, মাশরুম চাষ, নার্সারি, বাগান তৈরি ও ব্যবস্থাপনা, বীজ উৎপাদন, ফুড প্রসেসিং, বিউটিফিকেশন ও হেয়ার কাটিং, আরবি ভাষা শিক্ষা, মোবাইল সার্ভিসিং ও রিপেয়ারিং, ট্যুরিস্ট গাইড, গ্রাফিকস ডিজাইন, হস্তশিল্পসহ আছে প্রাতিষ্ঠানিক অনেক কোর্স।
অ-প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স---
পারিবারিক হাঁস-মুরগি পালন, ব্রয়লার, গরু ও ছাগল পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, পশু-পাখির খাদ্য প্রস্তুত ও বাজারজাতকরণ, পশু-পাখির রোগ ও তার প্রতিরোধ, কবুতর পালন, কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, মৌসুমি ও সমন্বিত মৎস্য চাষ, পোনা চাষ, মৎস্য হ্যাচারি, গলদা ও বাগদা চিংড়ি চাষ, শুঁটকি তৈরি ও সংরক্ষণ, বসতবাড়িতে সবজি চাষ, নার্সারি, ফুল চাষ, ফলের চাষ, কম্পোস্ট সার তৈরি, গাছের কলম তৈরি, ঔষধি গাছের চাষ, ব্লক প্রিন্টিং, বাটিক প্রিন্টিং, পোশাক তৈরি, স্ক্রিন প্রিন্টিং, স্প্রে প্রিন্টিং, মণিপুরী তাঁতশিল্প, কাগজের ব্যাগ ও ঠোঙা তৈরি, বাঁশ ও বেতের সামগ্রী তৈরি, নকশিকাঁথা তৈরি, কারু মোম তৈরি, পাটজাত পণ্য তৈরি, চামড়াজাত পণ্য তৈরি, রিকশা, সাইকেল, ভ্যান মেরামত, ফটোগ্রাফি।
যুব সংগঠকদের জন্য প্রশিক্ষণ---
ক্যাটারিং, পর্যটন ব্যবস্থাপনা ও ট্যুর গাইড, হাউসকিপিং, ফ্যাশন ডিজাইন, যুব নেতৃত্ব বিকাশ ও যুব সংগঠন ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন, যুব ও স্বাস্থ্যবিষয়ক, ফ্রন্ট ডেস্ক ম্যানেজমেন্ট, যুব উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও বিক্রয় ব্যবস্থাপনা, যুবদের আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং প্যাকেটজাতকরণ, মাশরুম চাষ, বিউটিফিকেশন, ওয়েল্ডিংয়ে রড বাইন্ডিং, উদ্যোক্তা উন্নয়ন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ---
মৌলিক প্রশিক্ষণ (৮ সপ্তাহ মেয়াদী), অর্থব্যবস্থাপনা ও নিরীক্ষা, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা, কমিউনিকেটিভ ইংলিশ লার্নিং, আচরণ ও শৃঙ্খলা, আধুনিক অফিস ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা, ঋণ ব্যবস্থাপনা, ইন্টারনেট, বেসিক কম্পিউটার, গ্রাফিকস ডিজাইন, অনলাইন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানবিষয়ক কোর্স।
অন্যান্য তথ্যের জন্য:
বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি তথ্য, কোর্সের বিস্তারিত ও ঋণসংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে।
ঠিকানা : ১০৮ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন : ৯৫৫৯৩৪৪, ৯৫৬০৭৬১।
#বন্ধু , কারো মুখরোচক কথায়, কাল্পনিক কথামালার ফাঁদে পরে বা প্রতারনার স্বীকার হয়ে নয়, বরং নিজেকে প্রস্তুত করে কৃষি কাজে আসুন । তাতে আপনি যেমন লাভবান হবেন, তেমনি লাভবান হবে দেশর কৃষি খাত তথা দেশ ।
#সকল নতুন কৃষি উদ্যোগতাদের স্বাগতম ও শুভ কামনায় -- চাষা আলামীন জুয়েল॥


মন্তব্যসমূহ