পানির উপরেই ভাসমান সবজি চাষ...............
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় বছরের প্রায় পুরোটা সময় জলাবদ্ধ থাকে ৷ এ সব এলাকার ঊদ্দ্যোমী কৃষক বন্ধুরা ভাসমান পদ্ধতিতে গাছের চারা এবং সবজি উৎপাদন করে কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে দার করিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায় ।
কৃষকের কৌশল:--- বছর জুড়েই জলাবদ্ধতা, সাথে কচুরিপানার মিছিল। এসকল এলাকার নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক উপায়ে কৃষিকাজ কার্যত অসম্ভব৷ তবে বৈরী এই পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়ন, উজিরপুরের হারতা এবং পিরোজপুর এর নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা, মুগাঝোর এর কৃষকরা নিজেদের কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষিকাজ।
ভাসমান কৃষিক্ষেত্র:
এ সকল এলাকার পুরো জলাভূমতি যেন এক ভাসমান কৃষির স্বর্গরাজ্য। নিজেদের উদ্ভাবিত ‘ধাপ’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেন এ সব এলাকার কৃষক ৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ‘কৃষি ঐতিহ্য অঞ্চল’ হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছো এ সকল অঞ্চলের কৃষকদের উদ্ভাবিত ভাসমান পদ্ধতির এ চাষাবাদ ৷
যেভাবে তৈরি হয় ধাপ:
পানিতে ডুবে থাকা নিম্নাঞ্চল কচুরিপানা, দুলালীলতা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জল সহিষ্ণু ঘাসসহ নানান জলজ উদ্ভিদে ভরপুর ৷ এ সব জলজ উদ্ভিদকে স্তূপ করে পচিয়ে তারা তৈরি করেন ভাসমান এক ধরণের ধাপ ৷ এই ভাসমান ধাপের উপরেই চাষাবাদের এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তাঁরা ৷
পুরনো ধারা:
কৃষি জমির বিকল্প হিসেবে জলাশয়ে ভাসমান চাষাবাদ দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে এ অঞ্চলে ৷ কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পদ্ধতিতে কৃষির উৎপাদনশীলতা জমির চেয়ে ১০ গুণ বেশি ৷
জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ:
ধাপ পদ্ধতির এ চাষাবাদ হয় সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে ৷ রাসায়নিক সারের ব্যবহার নেই বললেই চলে ৷ ফলে উৎপাদন খরচও কম এবং স্বাস্থ্যকর ৷
ভাসমান বীজতলা:
জলাভূমিতে প্রথমে কচুরিপানা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জলজ ঘাস স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই ফুট পুরু ধাপ বা ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয় ৷ এগুলো কয়েকদিন ধরে পচানো হয় ৷ একেকটি ভাসমান ধাপ ৫০-৬০ মিটার লম্বা ও দেড় মিটার চওড়া হয় ৷
চাষ করা যায় অনেককিছু:
ভাসমান এ সব ধাপে সাধারণত লাউ, সিম, বেগুন, বরবটি, করলা, পেঁপে, টমেটো, শশা, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, মরিচ ইত্যাদি শাকসবজি ও মশলার চারা উৎপাদন করে থাকেন কৃষকরা ৷ অনেক কৃষক আবার লাল শাক, ঢেঁড়স, হলুদ ইত্যাদিও চাষ করে থাকেন ৷
নেই কোনো কৃষিঋণের ব্যবস্থা:
এ সকল চাষীদের জন্য বেসরকারী কিছু এনজিও ক্ষুদ্র ঋণ দিলেও রাষ্টয়ত্ব ব্যংক থেকে কৃষি ঋণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই৷ স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে চরা হারে সুদ নিয়ে গরিব এ চাষীরা তাঁদের কৃষি কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন ৷ সরকার সহজশর্তে ঋণ দেয়ার কার্যকর উদ্দোগ গ্রহণ করলে তাঁরা ভাসমান এ চাষাবাদের আরও বিস্তৃতি ঘটাতে পারবেন ৷
বিক্রি হয় কচুরিপানা:
কচুরিপানা সহ জলজ উদ্ভিদের বেশ চাহিদা রয়েছে এ সকল এলাকায় ৷ এক নৌকা কচুরিপানা সাধারণত বিক্রি হয় ২-৩ হাজার টাকায় ৷ বিভিন্ন এলাকায় এসব কচুরিপানার হাটও বসে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার----- Pranab Halder Partha।
#আধুনিক কৃষিতে দ্রুত এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। বদলে যাক কৃষকের আর্থ - সামাজিক অবস্থা। সকল কৃষক ভাই ও বোনদের জন্য শুভ কামনায়--- চাষা আলামীন জুয়েল *
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় বছরের প্রায় পুরোটা সময় জলাবদ্ধ থাকে ৷ এ সব এলাকার ঊদ্দ্যোমী কৃষক বন্ধুরা ভাসমান পদ্ধতিতে গাছের চারা এবং সবজি উৎপাদন করে কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে দার করিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায় ।
কৃষকের কৌশল:--- বছর জুড়েই জলাবদ্ধতা, সাথে কচুরিপানার মিছিল। এসকল এলাকার নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক উপায়ে কৃষিকাজ কার্যত অসম্ভব৷ তবে বৈরী এই পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়ন, উজিরপুরের হারতা এবং পিরোজপুর এর নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা, মুগাঝোর এর কৃষকরা নিজেদের কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষিকাজ।
ভাসমান কৃষিক্ষেত্র:
এ সকল এলাকার পুরো জলাভূমতি যেন এক ভাসমান কৃষির স্বর্গরাজ্য। নিজেদের উদ্ভাবিত ‘ধাপ’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেন এ সব এলাকার কৃষক ৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ‘কৃষি ঐতিহ্য অঞ্চল’ হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছো এ সকল অঞ্চলের কৃষকদের উদ্ভাবিত ভাসমান পদ্ধতির এ চাষাবাদ ৷
যেভাবে তৈরি হয় ধাপ:
পানিতে ডুবে থাকা নিম্নাঞ্চল কচুরিপানা, দুলালীলতা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জল সহিষ্ণু ঘাসসহ নানান জলজ উদ্ভিদে ভরপুর ৷ এ সব জলজ উদ্ভিদকে স্তূপ করে পচিয়ে তারা তৈরি করেন ভাসমান এক ধরণের ধাপ ৷ এই ভাসমান ধাপের উপরেই চাষাবাদের এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তাঁরা ৷
পুরনো ধারা:
কৃষি জমির বিকল্প হিসেবে জলাশয়ে ভাসমান চাষাবাদ দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে এ অঞ্চলে ৷ কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পদ্ধতিতে কৃষির উৎপাদনশীলতা জমির চেয়ে ১০ গুণ বেশি ৷
জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ:
ধাপ পদ্ধতির এ চাষাবাদ হয় সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে ৷ রাসায়নিক সারের ব্যবহার নেই বললেই চলে ৷ ফলে উৎপাদন খরচও কম এবং স্বাস্থ্যকর ৷
ভাসমান বীজতলা:
জলাভূমিতে প্রথমে কচুরিপানা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জলজ ঘাস স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই ফুট পুরু ধাপ বা ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয় ৷ এগুলো কয়েকদিন ধরে পচানো হয় ৷ একেকটি ভাসমান ধাপ ৫০-৬০ মিটার লম্বা ও দেড় মিটার চওড়া হয় ৷
চাষ করা যায় অনেককিছু:
ভাসমান এ সব ধাপে সাধারণত লাউ, সিম, বেগুন, বরবটি, করলা, পেঁপে, টমেটো, শশা, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, মরিচ ইত্যাদি শাকসবজি ও মশলার চারা উৎপাদন করে থাকেন কৃষকরা ৷ অনেক কৃষক আবার লাল শাক, ঢেঁড়স, হলুদ ইত্যাদিও চাষ করে থাকেন ৷
নেই কোনো কৃষিঋণের ব্যবস্থা:
এ সকল চাষীদের জন্য বেসরকারী কিছু এনজিও ক্ষুদ্র ঋণ দিলেও রাষ্টয়ত্ব ব্যংক থেকে কৃষি ঋণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই৷ স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে চরা হারে সুদ নিয়ে গরিব এ চাষীরা তাঁদের কৃষি কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন ৷ সরকার সহজশর্তে ঋণ দেয়ার কার্যকর উদ্দোগ গ্রহণ করলে তাঁরা ভাসমান এ চাষাবাদের আরও বিস্তৃতি ঘটাতে পারবেন ৷
বিক্রি হয় কচুরিপানা:
কচুরিপানা সহ জলজ উদ্ভিদের বেশ চাহিদা রয়েছে এ সকল এলাকায় ৷ এক নৌকা কচুরিপানা সাধারণত বিক্রি হয় ২-৩ হাজার টাকায় ৷ বিভিন্ন এলাকায় এসব কচুরিপানার হাটও বসে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার----- Pranab Halder Partha।
#আধুনিক কৃষিতে দ্রুত এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। বদলে যাক কৃষকের আর্থ - সামাজিক অবস্থা। সকল কৃষক ভাই ও বোনদের জন্য শুভ কামনায়--- চাষা আলামীন জুয়েল *

মন্তব্যসমূহ