সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
দুগ্ধ খামারের দৈনন্দিন কার্যাবলী : ( লেখক ও পোস্ট ক্রেডিট জনাব Mukty Mahmud )
-------------------------------------------------------
অনেকেই জানতে চান একটি দুগ্ধ খামারের দৈনন্দিন কাজ গুলি কি কি ভাবে, কোনটা কোন সময়ে করতে হয়। অথবা,এক কথায় বলা যেতে পারে একটি দুগ্ধ খামারের দৈনন্দিন কাজের রুটিন টা কেমন হবে। আমি খুব সংক্ষিপ্ত ভাবে খামারীদের দৃষ্টিকোণ থেকে এই রুটিনের ব্যাপারে কিছুটা আলোচনা করছি,আশা করি অন্তত নতুন খামারী ভাইয়েরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন।




১। দুগ্ধবতী গাভীকে প্রচুর বিশ্রাম দিতে হয়,এতে তার দুধ উৎপাদন বাড়ে। এ কারণে গাভীকে ভোর ৬ টা বাজার আগে কখনোই তুলবেন না। তাহলে আমরা বুঝলাম যে গাভীকে ভোর ৬ টায় তুলে দিতে হবে।
২। ভোর ৬ টা থেকে সকাল ৭ টার মধ্যে গাভীর ঘর এবং গাভী গুলিকে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। ঘর পরিষ্কার করবেন পানির সাথে জীবাণুনাশক দিয়ে। গাভীর ওলানও পটাশের পানি দিয়ে ধুয়ে দিবেন হোক সেটা দুধাঁলো বা গর্ভবতী। রানের পিছনের দিক,পেটের নিচ এবং ক্ষুরা সহ পা ধুয়ে দিবেন ভালো করে। বাছুর গুলিরও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করবেন।
৩। সকাল ৭ টা বাজে দুধ দোয়াবেন এবং এক ঘন্টার ভিতর সব গাভীর দুধ দুইয়ে ফেলবেন। মনে রাখবেন গাভীর দুধ দ্রুত দোয়াতে হয়, কারণ একটি গাভী যখন দোয়ানোর জন্য তৈরী হবে তখন থেকে মাত্র ৮-১০ মিনিট তার অক্সিটোসিন হরমোন নি:সরণ শুরু হয়।কাজেই দ্রুত দুধ দোওয়ানোর কাজ সারতে হবে।
৪। সকাল ৮ টায় দুধ দোয়ানোর কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে গাভীকে দানাদার খাদ্য সরবরাহ করবেন। এরই মধ্যে বাছুর গুলোর মধ্যে যেগুলি দানাদার খাদ্য খেতে শিখেছে তাদের খাদ্যও দিতে হবে।
৫। গাভীর খাদ্য গ্রহনের পর্ব শেষ হলে তাকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিয়ে, সকাল ১১ টায় কিছু কাঁচা ঘাস আর খড় দিবেন। বাছুর গুলি এসময় বেধে ফেলবেন।
৬। দুপুর ১ টায় গাভী গুলি কে গোছল করিয়ে দিবেন ভালো করে। এর পর আবার বিশ্রাম।
৭।বিকাল ৪ টায় দুধ দোয়াবেন।
৮। বিকাল ৫ টায় দানাদার খাদ্য দিবেন।
৯। সন্ধ্যে ৬ টায় কাঁচা ঘাস আর খড় দিবেন।
১০। রাত ৮ টার ভিতর গরুর খাদ্য পাত্র থেকে সব কিছু সরিয়ে তা পরিষ্কার পানি দিয়ে পূর্ণ করে দিবেন। মনে রাখবেন এটা করলে গাভীর দুধ উৎপাদন ১৫%-২০% বাড়ে!!!
একটি দুগ্ধ খামারের দৈনন্দিন কার্যক্রম আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এরকমই হয়ে থাকে।  অনেক বিষয় হয়তো আমার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে,আপনারা সেগুলি মন্তব্যে উল্লেখ করলে পোস্টটি হয়তো আরো তথ্যবহুল হবে।
#বিদ্র : পোস্টটি অতি গুরুত্বপূর্ণ । খামারি বন্ধুগণ উপকৃত হবেন আমার বিশ্বাস । আমার জানামতে লেখক নিজে  একজন সফল ডেইরী খামারি ।
#সকল খামারি বন্ধুদের জন্য শুভকামনায় --চাষা আলামিন জুয়েল ॥

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...