সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
শিক্ষিত কৃষক এখন সময়ের দাবি :-----

আমাদের দেশের মানুষ ক্রমান্বয়ে শিক্ষিত হচ্ছে , এটা ভীষণ ভালো একটা দিক । একটা জাতীর উন্নতির জন্য যে মৌলিক বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট, শিক্ষা তারমধ্যে অন্যতম ।  কিন্ত আমাদের শিক্ষা গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য চাকুরী আথবা ব্যবসা । আমরা আমাদের উত্তরসুরিদের মানুষিক ভাবে ছোটবেলা থেকে এমনই একটি ধারণা দিয়ে থাকি । কিন্ত কেউ তার ছোট ভাই কিংবা বাচ্চাকে কখনো কি বলেছি যে . . . . মন দিয়ে লেখাপড়া কর, একজন আধুনিক কৃষক হতে হবে ! !   এটা পাগলের প্রলাপ তাই না  ?


কিন্তু একবার ভেবে দেখুন , যে আশা নিয়ে যাকে শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুললেন ,আপনার সেই শিক্ষিত ছেলেটি এখন বেকার ঘুরে বেড়ায় । চাকুরী না পেয়ে এখন হতাশ । আপনার কাছে ব্যবসা করার জন্য টাকা চায় । কিন্ত আপনি সন্তান শিক্ষিত করতে গিয়েই সকল পুঁজি শেষ করেছেন । তাকে ব্যবসা করার জন্য দেবার মত পুঁজি এখন আপনার নেই । তাই এবার ফসলি জমি বিক্রয় করে হয় ব্যবসার জন্য আথবা বিদেশ পাঠাতে টাকা তুলে দিলেন সন্তানের হাতে । ব্যবসায় সফলতা আসলে ভলো , নয়তো সব শেষ । অথবা বিদেশ গিয়ে আপনার সন্তান কি কাজ করবে  ?  নিশ্চই যে কোন শ্রমিক এর কাজ ।

এবার একটু হিসেবটা মেলান । শ্রমিকই যদি হতে হলো, তাহলে অন্যের অধীনে কেন ? নিজের খামারে কেন নয়  ? কেন এতো কষ্ট করে, পয়সা খরচ করে শিক্ষা গ্রহন করার পরও বেকার বসে থাকা ? আজ যদি সে প্রথম থেকেই মানুষিক ভাবে প্রস্তুত থাকতো , তা হলে লেখা পড়া শেষ করেই সে নিজেকে কাজে নিয়োজিত করতে পারতো । আপনার ফসলি জমি হয়ে উঠতো সম্পদ ।টাকা খরচ করে বিদেশ গিয়ে পরাধীন শ্রমিক না হয়ে, সেই শ্রমটা নিজের জমিতে দিতে পারতো। পাশাপশি আরো কিছু মানুষের কর্ম সংস্থান করে দিতে পারতো ।
কে এজন্য মূলত দায়ী ? সেই শিক্ষিত বেকার ছেলেটি ? নাকি আমাদের মানসিকতা ? নাকি আমাদের অর্থহীন তথাকথিত আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা ?? একবার ভেবে দেখতে হবে আমাদের । ভেবে দেখতে হবে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের ।
শিক্ষা সকল ক্ষেত্রেই অতীব জরুরী একটি নিয়ামক । জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । সুশিক্ষা একজন মানুষকে পরিণত করে , জীবন সংগ্রাম পরিচলনায় দক্ষতা বৃদ্ধি করে, সুচিন্তিত লক্ষ্য অর্জন ত্বরান্বিত করে। একজন একজন করে একটি পরিবার শিক্ষিত হবে । এভাবেই সমাজ এবং একটি জনগোষ্ঠী । আর এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠী যখন কৃষিতে মনোযোগী হবে , তখনই পরিবর্তন হয়ে যাবে দেশের প্রেক্ষাপট । কৃষি হবে আরো আধুনিক , বদলে যাবে সার্বিক কৃষি ব্যবস্থা । পক্ষান্তরে সমৃদ্ধ হবে কৃষকের জীবনযাত্রা, বদলে যাবে আমাদের দেশের অর্থনীতি ।
#আসুন  বন্ধু--কৃষিকে ছোট না ভেবে, এই পেশায় যুক্ত হই । নিজের পৈতৃক ভিটেমাটিকে সবুজে সবুজে ভরে তুলি । স্বীকার করি বা না করি, এই কৃষিই আমাদের অস্তিত্ব , আমাদের শিকড়। আর একমাত্র শিক্ষিত কৃষক এবং আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাই পারে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে । আজ এটা সময়ের দাবি  . . . . .  চাষা আলামীন জুয়েল ॥

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...