সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
যুগ বদলেছে, সততা - বিশ্বাস দুর্বল হয়েছে , স্বার্থপরতা-প্রতারণা আজ শক্তিশালী:--

একটা সময় ছিলো, শুধু মুখের কথায় লেনদেন চলতো । একজন আরেকজনকে অন্ধবিশ্বাস করতো । এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে বিশ্বাসের মর্যাদা সমুন্নত থাকতো । মানুষের মাঝে অভাব অনটন থাকলেও ভালবাসার অভাব ছিলোনা । ছিলো আত্নীয়তা, সামাজিক বন্ধন ।


কিন্তু আজকাল ভাত -কাপড়ের অভাব নাই বললেই চলে । আছে মূল্যবোধ, সততা, নীতি, আত্মমর্যাদার অভাব । আজ প্রখর হয়েছে লোভ --ক্ষমতার লোভ , অপরিসীম বিত্ত বৈভবের লোভ , নাম খ্যাতির লোভ । যেটা পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিচ্ছে বিশ্ব মানবতাকে ।
লোভ থাকা দোষের কিছু নয় । সকল মানুষের মাঝেই সেটা বিদ্যমান । চাষা আলামিন জুয়েলের মাঝেও রয়েছে । আছে স্বচ্ছলতার লোভ ,আছে সফলতা অর্জনের লোভ , আছে ভালবাসা পাওয়ার লোভ , আছে পরিপূর্ণ হবার লোভ । কিন্তু সে লোভ যদি অন্য কোন মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায় , সে লোভ যদি মানবতা বিবর্জিত হয়, তখনই দোষের ।

পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকেই ইবলিশ শয়তানের আবির্ভাব।তাই তার অনুসারী হয়ে আমার মত কুমতলববাজ, ধান্দাবাজ, প্রতারকের দল নিত্য নতুন ফন্দি আটবে সেটাই সাভাবিক । কিন্তু আপনি কেন অতি লোভে পরে সে ফাঁদে পা দিচ্ছেন ? কেন লালসায় পরে নিজের ক্ষতি করছেন ? তাহলে আপনিওকি একই দলের ? সুযোগ থাকলে আপনিওকি একই কাজ করতেন ? নাকি আপনি নিজেকে অতি বুদ্ধির হাড়ি ভাবলেও আদতে হাবা !!

প্রসঙ্গ !!! এর আগেও বহুবার বন্ধুদের, নতুন উদ্যোগতাদের সতর্ক করার চেষ্টা করেছি । কিন্তু খুব বেশী যে কাজে আসেনি, সেটা ফেসবুক সহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবর গুলো পড়লেই বুঝতে পারি । আসলে আমি একজন অতি নিন্মমানের চাষা । তাই আমার কথা কতটুকুই বা গুরুত্ব রাখে ? ক'জন সময় নষ্ট করে পারেন ! কিন্তু প্রবাদ রয়েছে "গরীবের কথা বাসি হলে ফলে"। আর ঘটছেও তাই । সেজন্যই নিজের বিবেগ পীড়ন ঠেকাতে আজকের এই বিষয়ে লিখতে হচ্ছে ।

মূল প্রসঙ্গে আসি । ফেসবুক আজকের আধুনিক যুগের সবথেকে প্রিয় এবং শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম । তাই ফেসবুকেই এখন চলছে জমজমাট ব্যবসা।স্বর্ণ থেকে শুরু করে ঝাড়ু - জুতা কি নাই এখানে ? পৃথিবী আজ আঙ্গুলের মাথায় । শুধু স্পর্শ করলেই সব হাজির । ফেসবুকের কল্যাণে নতুন নতুন সম্পর্কের সৃষ্টি যেমন হচ্ছে , তেমনি ভাঙ্গছেও উল্লেখযোগ্য হারে । যত দ্রুত, সহজে সবকিছু পাচ্ছি , হারাচ্ছিও আরো বেশী দ্রুত । কোন কিছুতেই যেন আজ মহব্বত নেই । যদি থাকতো তাহলে আজকের মানুষের সবথেকে প্রিয় বস্তু টাকা এখানে সেখানে ঢেলে দিতোনা।

কি আশ্চর্য !! দেখা নেই , কথা নেই , জানা বুঝার বালাই নেই , শুধু ফেসবুকের ফেইক সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার মূল্যবান অর্থ অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছেন !! কত টাকার মালিক আপনি ? নিজের শ্রম সততা দিয়ে রোজগার করেছেন ? নাকি বাপ - ভাই কিংবা জোচ্চোরির রোজগার করা টাকা ? শুনে রাগ লাগছে ? কষ্ট পেলেন ? তার কোন অবকাশ নাই । কারণ আমি এই অধম চাষা যা বলছি, তার স্বপক্ষে যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যখ্যা করবো ইনশাল্লাহ্ ।
যার কথায় আপনি টাকা বিনিয়োগ করলেন তাকে আপনি ভালকরে চিনেন ? তার অতীত ইতিহাস আপনি জানেন ? তার প্রস্তাবিত ব্যবসার খোঁজখবর নিয়েছেন ? কোন বৈধ কাগজপত্র দেখেছেন ? বিনিয়োগের পূর্বে কোন শুভাকাংখী বা অভিজ্ঞজনের পরামর্শ নিয়েছেন ?আপনি বিনিয়োগের কোন প্রমাণপত্র পেয়েছেন ? পেয়ে থাকলে তার আইনি বৈধতা যাচাই করেছেন ? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রই না আসে । তাহলে আমি যে পূর্বে মন্তব্য করেছি, তার প্রমাণ পেয়েছেন নিশ্চই ।

যেকোন ব্যবসায় বিনিয়োগ করার পূর্বে একজন অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীও দশবার ভাবেন । আর কৃষি ভিত্তিক হলেতো কথাই নেই । ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে আমাদের দেশে কৃষি সম্ভবনার পাশাপশি রয়েছে অসংখ্য প্রতিকূল পরিস্থিতি । তাই এখানে বিনিয়োগ করার আগে খুব সতর্কতার সাথে বিনিয়োগ করতে হবে । বিভিন্ন সূত্র থেকে, সহযোগী সেক্টর থেকে, অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের অভিমত থেকে তথ্য সংগ্রহ করে যাচাইবাছাই করে একটা সারাংশ বেড় করতে হবে । তারপর সবগুলো বিষয় অনুকূলে থাকলেই কেবল কৃষিতে বিনিয়োগ করা উত্তম । কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটছে উল্টো ঘটনা । বিন্দুমাত্র যাচাইবাছাই ছাড়াই, কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই আমরা ঝুঁকছি কৃষি বাণিজ্যে । অবশেষে ফলাফল যেটা হবার, সেটাই হচ্ছে ।
সবথেকে ভয়াভহ বিপদ হচ্ছে , অন্যের প্ররোচনায় বিনিয়োগ । তথ্য উপাত্ত না জেনেই অন্যের সঙ্গে অংশীদারি বিনিয়োগ । আরে ভাই , বিনিয়োগ করেন অসুবিধে নাই । জেনে বুঝে করেন । আমি খ্যাতিমান চাষা আলামিন , তিনি অমুক মোহাম্মদ, উনি গেদুরাম টার্কি , সে কবুতর বাদশা -- এগুলো কোন বিবেচ্য যোগ্যতা নয় । বিনিয়োগ করার আগে আমার করা প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর জেনে বিনিয়োগ করুন । ব্যবসায় লাভ - ক্ষতি থাকবেই । কিন্তু প্রতারিত হবেন কেন ?

অন্যের দেখানো লোভে লোভী হবেন না । বরং নিজে সচেতন হোন । ব্ন্ধু স্বজনদের সচেতন করুন । জেনে বুঝে কৃষি ব্যবসায় আসুন । আল্লাহ্ সহায় থাকলে আপনি সফল হবেন ইনশাল্লাহ্ ।

#অতি বচন , কথনের জন্য ক্ষমা চাইছি । তারপরেও যদি আপনি / আপনারা উপকৃত হন , সেটাই আমার স্বার্থকতা । শুভকামনায় ---চাষা আলামিন জুয়েল ॥

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...