সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
গ্রীষ্মকালীন সবজির সার ব্যবস্থাপনা---

CAJ সূচনা : গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে বেগুন, ঢেঁড়স, মিষ্টিকুমড়া, কাকরোল, করলা, পটল, শসা, পুঁইশাক, লালশাক, ডাঁটাশাক, গীমা কলমি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব সবজির বীজ বপন ও চারা রোপণের আগে কী পরিমাণ সার দিবেন তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো। তবে সবজি ভেদে সার ব্যবহারের ক্ষেত্র কম-বেশি হয়ে থাকে। নিচে কয়েকটি সবজির সার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সম্পর্কে ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ্ ।


বেগুন চাষে সার ব্যবস্থাপনা : জমি তৈরির শেষ ধাপে অর্ধেক গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট গোবর এবং সমুদয় টিএসপি/ডিএপি, জিপসাম, জিংক ও বোরন সার চারা রোপণের ১ সপ্তাহ আগে গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে জিংক ও বোরন সার না দিলে স্প্রে আকারে চিলেটেড জিংক যেমন লিবরেল জিংক এবং সলিউবর বোরন যেমন-লিবরেল বোরন ব্যবহার করা যায়। মূল জমিতে চারা রোপণের ৩ সপ্তাহ পর থেকে সমান তিন কিস্তিতে গাছের গোড়ার চারপাশে রিং প্রকৃতিতে ইউরিয়া ও মিউরেট অব পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। এরপর ১০-১৫ দিন অন্তর সেচ প্রদান করতে হবে।

ঢেঁড়স চাষে সার ব্যবস্থাপনা : জমি তৈরির শেষ ধাপে অর্ধেক ইউরিয়া, সমুদয় গোবর, টিএসপি/ডিএপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম, জিংক ও বোরন সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। মাটিতে জিংক ও বোরন সার না দিলে স্প্র্রে আকারে চিলেটেড জিংক যেমন-লিবরেল জিংক এবং সলিউবর বোরন যেমন—লিবরেল বোরন ব্যবহার করা যায়। অবশিষ্ট ইউরিয়া সার দুটি সমান কিস্তিতে বীজ বপনের যথাক্রমে ৩য় ও ৫ম সপ্তাহে গাছের গোড়ার চারপাশে প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে রস কম থাকলে সেচ প্রদান করতে হবে।

মিষ্টিকুমড়া ও লাউ চাষে সার ব্যবস্থাপনা : চারা লাগানোর ৫-৭ দিন আগে গর্ত তৈরি করে তার মধ্যে সমুদয় টিএসপি/ডিএপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম, জিংক, বোরন ও জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।

কাকরোল ও করলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা : চারা রোপণের ৪-৫ দিন আগে গর্তে সমুদয় টিএসপি/ডিএপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম, জিংক, বোরন এবং জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে জিংক ও বোরন সার না দিলে স্প্রে আকারে চিলেটেড জিংক যেমন-লিবরেল জিংক এবং সলিউবর বোরন যেমন—লিবরেল বোরন ব্যবহার করা যায়। ইউরিয়া সার দুটি সমান কিস্তিতে যথাক্রমে অংকুরোদগমের ২ এবং ৫ সপ্তাহ পর প্রয়োগ করে সেচ দিতে হবে।

পটল চাষে সার ব্যবস্থাপনা : চারা রোপণের ৪-৫ দিন আগে গর্তে সমুদয় টিএপি/ডিএপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম, জিংক এবং জৈবসার প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে জিংক ও বোরন সার না দিলে স্প্রে আকারে চিলেটেড জিংক যেমন-লিবরেল জিংক এবং সলিউবর বোরন যেমন—লিবরেল বোরন ব্যবহার করা যায়। মূল জমিতে চারা রোপণের ৩য় সপ্তাহ পর থেকে প্রতি ৩ সপ্তাহ অন্তর ৪টি সমান কিস্তিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।

শসা চাষে সার ব্যবস্থাপনা : চারা রোপণের ৪-৫ দিন আগে গর্তের মধ্যে অর্ধেক ইউরিয়া এবং সমুদয় গোবর, টিএসপি/ডিএপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। মাটিতে জিংক ও বোরন সার না দিলে স্প্রে আকারে চিলেটেড জিংক যেমন-লিবরেল জিংক এবং সলিউবর বোরন যেমন-লিবরেল বোরন ব্যবহার করা যায়। অবশিষ্ট ইউরিয়া বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করে পানি দিতে হবে।

পুঁইশাক চাষে সার ব্যবস্থাপনা : সমুদয় গোবর/কম্পোস্ট, টিএসপি/ডিএপি, জিপসাম, অর্ধেক ইউরিয়া এবং মিউরেট অব পটাশ সার জমি তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। মাটিতে জিংক ও বোরন সার না দিলে স্প্রে আকারে চিলেটেড জিংক যেমন—লিবরেল জিংক এবং সলিউবর বোরন যেমন—লিবরেল বোরন ব্যবহার করা যায়। অবশিষ্ট ইউরিয়া ও মিউরেট অব পটাশ সার দুটি সমান কিস্তিতে যথাক্রমে চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে রস কম থাকলে সেচ দিতে হবে।
( তথ্য ---- সংগৃহীত ও সংকলিত )

#সকল কৃষক বন্ধুদের জন্য শুভকামনায় ---চাষা আলামীন জুয়েল.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...