সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
জলাতঙ্ক রোগ ও টিকা:

(CAJ---RABIES MALADY & VACCINE)

জলাতঙ্ক বা র‌্যাবিস (Rabies) মানুষসহ সকল উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রের একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগে গলবিলের পেশী অবশতার কারণে জল গ্রহণে অসুবিধাজনিত ভীতির সৃষ্টি হয় বলে রোগটিকে বাংলায় জলাতঙ্ক রোগ বলে। আক্রান্ত প্রাণীর উষ্মত্ততা, আক্রামণাত্মক ভাব, উর্দ্ধগতি, অবশতা, ফ্যারিঞ্জিয়াল প্যারালাইসিসি ও মুখ দিয়ে লালা ঝরা এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য।


মাষ্টার সীড : ফ্লারি ষ্ট্রেইন।
অরিজিন: World Health Organization (WHO)

ব্যবহার বিধিঃ

হেপ (HEP) টিকা শুধুমাত্র Pre-exposure টিকা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যে সমস্ত প্রাণীকে জলাতঙ্ক আক্রান্ত পশু কামড়ায় নাই বা যে সমস্ত প্রাণী জলাতঙ্কে আক্রান্ত প্রাণীর লালা বা ভাইরাস সংক্রমিত অন্য কোন বস্ত্তর (Virus material) সংস্পর্শে আসে নাই সে সমস্ত প্রাণী এ রোগে যাতে আক্রান্ত না হয় সে জন্য এ টিকা দেওয়া হয়। যে কোনভাবে (কামড়ালে, আচড়ালে, ক্ষতস্থানে লালা বা অন্য কোন ভাইরাস মিশ্রিত বস্ত্ত লাগা) প্রাণীদেহে র‌্যাবিস ভাইরাস প্রবেশ করলে ঐ প্রাণীকে এ টিকা দেওয়া যাবে না। এসব ক্ষেত্রে Post Exposure Vaccine ব্যবহার করত হয়। হেপ (HEP) টিকা গবাদিপশু, বিড়াল, বানর, বেজী ইত্যাদি প্রাণীতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণতঃ গবাদিপশুকে ৩ মাস ও অন্যান্য প্রাণীকে ১ মাসের বেশি বয়সে এই টিকা দেওয়া হয়।
লেপ (LEP) টিকা প্রতিষেধক হিসাবে কুকুরে ব্যবহৃত হয়। সাধারণতঃ তিন মাস বয়সের বেশি বয়সের কুকুরকে এই টিকা দেওয়া হয়। মায়ের টিকা দেওয়া থাকলে ৪ মাস পর্যন্ত মাতৃ এন্টিবডি প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। মায়ের টিকা না দেওয়া থাকলে ২ মাস বয়সে হেপ (HEP) ও ৪ মাস বয়সে লেপ (LEP) টিকা দিতে হয়।

প্রাণীর নাম-টিকার নাম-পরিমাণ-প্রয়োগের স্থান--রোগ প্রতিরোধ কাল

কুকুর-----লেপ (LEP)----৩ এমএল---মাংসে--১ বৎসর।

গবাদিপশু ও বানর--হেপ (HEP)--৩ এমএল--মাংসে--৩০ দিন পরে বুষ্টার ডোজ--তারপর ১ বৎসর অন্তর অন্তর।

বিড়াল, বেজী ইত্যাদি--হেপ (HEP)--১.৫ এমএল--মাংসে --১ বৎসর।

জলাতঙ্ক টিকার সঙ্গে প্রদত্ত ডাইল্যুয়েন্ট মিশিয়ে ব্যবহার করতে হয়। ভায়াল বায়ুশূন্য থাকে বিধায় সিরিঞ্জের সাহায্যে কিছু বাতাল ভায়ালে ঢুকিয়ে নিলে সুবিধা হয়। টিকা অবশ্যই মাংসে প্রদান করতে হবে। কোন অবস্থাতেই চামড়ার নীচে প্রয়োগ করা যাবে না।

সরবরাহ : প্রতি ভায়ালে ১ মাত্রা টিকা+ ৩ এম এল ডাইল্যুয়েন্ট।
সরকারি মূল্য প্রতি ভায়ালঃ ২৫ টাকা।
প্রাপ্তি স্থান : উপজেলা ও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ।
তথ্য প্রদান : বিএলআরআই ।

#আমাদের প্রাণিসম্পদ থাকুক রোগমুক্ত ও নিরাপদ সেই প্রত্যাশায় ---চাষা আলামিন জুয়েল ॥

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...