সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
গলাফুলা রোগ ও টিকা:

(CAJ-HAEMORRHAGIC SEPTICAEMIA (HS) VACCINE)

গলাফুলা একটি তীব্র প্রকৃতির পাশ্চুরেলোসিস ধরনের রোগ। যাহা গরু এবং মহিষকে আক্রান্ত করে। এটি একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ যাহা Pasteurella multocida দিয়ে হয়। এ রোগে মৃত্যুর হার খুবই বেশি। বর্ষাকালে গলাফুলা রোগ বেশি দেখা যায়। পশুর শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় এ রোগের জীবাণু বিদ্যমান থাকে। কোন কারণে যদি পশু পীড়নের সম্মুখীন হয় যেমন- ঠান্ডা, অধিক গরম, ভ্রমণজনিত দুর্বলতা তখনই এ রোগ বেশি দেখা দেয়। সেপ্টিসেমিয়া, উচ্চ তাপমাত্রা, গ্রীবার সম্মুখভাগে এডিমা স্ফীতি ও উচ্চ মৃত্যুর হার এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য।


মাষ্টার সীড :  লোকাল ষ্ট্রেইন।
অরিজিন: প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মহাখালী, ঢাকা।

ব্যবহার বিধি:

অয়েল এ্যাডজুভেন্ট টিকা সাধারণত: প্রাপ্ত বয়স্ক (২য় বৎসরের উপরে) গবাদিপশুকে ২ এমএল মাত্রায় ও ছাগল ভেড়ায় ১ এম এল মাত্রায় প্রয়োগ করতে হয়। এনজুটিক এলাকায় ৬ মাস বা তদুর্ধ বয়সী বাছুরে প্রাপ্ত বয়স্ক গরুর অর্ধেক মাত্রায় টিকা দিতে হয়। এ্যালাম অধঃপতিত টিকা গবাদিপশুতে ৫ এম এল মাত্রায় ও ছাগল ভেড়ায় ২ এম এল মাত্রায় প্রয়োগ করতে হয়। অয়েল এ্যাডজুভেটটিক চামড়ার নিচে ও এ্যালাম ২ এমএল মাত্রায় প্রয়োগ করতে হয়। যেহেতু দু’ধরনের টিকাই মাঠ পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়, তাই বিষয়টির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ, অয়েল এ্যাডজুভেন্ট টিকা তেল থেকে প্রস্ত্তত বিধায় ভুলক্রমে এই টিকা মাংসে প্রদান করলে মাংসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়ে মাংসে ক্ষতি হয় এবং সমস্যার দৃষ্টি হতে পারে।

টিকা প্রদানের ২-৩ সপ্তাহ পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মাতে শুরু করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা টিকা দানের ১ বৎসর কাল পর্যন্ত বজায় থাকে। এই টিকা মৃত জীবাণু দ্বারা প্রস্তুত বিধায় এই টিকার মাধ্যমে রোগ বিস্তারের কোন সম্ভাবনা নাই।

টিকা প্রয়োগের স্থান ২/৩ দিন পর্যন্ত ফুলা থাকতে পারে। ত্রুটিপূর্ণ ইনজেকশনের কারণে এই ফুলা বেশ কিছু দিন থাকতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে (শতকরা ১ ভাগ পশুতে) এনাফাইলেকটিক (Anaphylactic) শক দেখা দিতে পারে। কোন এলাকায় বা খামারে টিকা প্রদানের পূর্বে মুষ্টিমেয় গবাদিপশুকে টিকা প্রদানের পর ২৫-৩০ মিঃ অপেক্ষা করে কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেয়া যায় কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা শ্রেয়। যদি কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তবে উক্ত বোতলের টিকা পুনরায় ব্যবহার করা উচিত নয়। টিকা প্রদানের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে এন্টিএলার্জিক ও প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে সুফল পাওয়া যায়।
অয়েল এ্যাডজুভেন্ট টিকা বেশ ঘন হওয়ায় এই টিকা প্রদানে মোটা বোরের নিডিল ব্যবহার সুবিধাজনক।

সরবরাহঃ
(ক) অয়েল এ্যাডজুভেন্ট টিকাঃ প্রতি ভায়ালে গরু/মহিষের জন্য ৫০ মাত্রা টিকা এবং ছাগল/ভেড়া/ বাছুরের জন্য ১০০ মাত্রা টিকা।
(খ) এ্যালাম অধঃপতিত টিকাঃ প্রতি ভায়ালে গরু/মহিষের জন্য ২০ মাত্রা টিকা এবং ছাগল/ভেড়া/ বাছুরের জন্য ৫০ মাত্রা টিকা।

সরকারি মূল্যঃ প্রতি ভায়ালঃ
(ক) অয়েল এ্যাডজুভেট টিকাঃ ৩০ টাকা।
(খ) এ্যালাম অধঃপতিত টিকাঃ ৩০ টাকা।

প্রাপ্তি স্থান : উপজেলা ও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার : বিএলআরআই ।

#আমাদের প্রাণীসম্পদ থাকুক রোগমুক্ত ও নিরাপদ সেই প্রত্যাশায় ---চাষা আলামিন জুয়েল ॥

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...