সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
CAJ--কৃষিতে নতুন/তরুণ উদ্যোগতাদের স্বাগতম, কিন্তু বুঝেশুনে, সাবধানে ( পুন: পোস্ট ) --------

মাটি, সবুজের সমারোহ, পশু -পাখি আমাদের প্রায় সকলকেই আকৃষ্ট করে । আর তাই মাটির সঙ্গে, কৃষির সঙ্গে রয়েছে আমাদের নাড়ীর সম্পর্ক । আমাদের দেশের বেশীর ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত । আবার অনেকে নতুন উদ্যোগতা হয়ে কৃষিতে ঝুকছেন । এটা সত্যিই বড় প্রশান্তির, ভীষণ সুখের । দেশ ও জাতীর জন্য সুসংবাদ ।




বর্তমান ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ও এগিয়েছে অনেক দূর । আর সেই সুবাদে আমরা হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছি আধুনিক/ডিজিটাল বিভিন্ন সেবা । এটার মাধ্যমে একদিকে আমরা যেমন উপকৃত হচ্ছি, তেমনি বেশ কিছু ক্ষতির দিকও কিন্তু রয়েছে । এই প্রজুক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা কেউ কেউ শুরু করেছি " ডিজিটাল প্রতারনা" । কারন প্রতারকদের সব থেকে বড় যে গুণাবলী রয়েছে, তাহলো দ্রুত লেবাস পরিবর্তন করে নিজেকে নতুন রুপে উপস্থাপন করা ।
কৃষক, কৃষি পণ্য, কৃষি সংগঠন, কৃষি সেবা --- বিভিন্ন নামে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে নতুন ওয়েবসাইট, পেইজ, গ্রুপ । এটা কিন্তু খারাপ নয় । কিন্তু বড় ভয়টা হয়ে দাঁড়ায় তখনই , যখন এর পিছনে লুকিয়ে থাকে প্রতারক চক্র । তাদের বিভিন্ন আঙ্গিকে দেয়া নতুন নতুন চমকপ্রদ পোস্ট মানুষকে আকৃষ্ট, লোভনীয় করে তোলে । খুব অল্প সময়ে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ভাগ্য বদলের এক অদ্ভুত স্বপ্ন তৈরি হয়ে যেতে পারে আপনার মাঝেও ।কিছু কিছু পোস্ট পরলে আপনি এতোটাই আকৃষ্ট হবেন যে, অন্য সকল পেশা ছেড়ে দিয়ে শুধুই  কৃষি উদ্যোগতা হবার ইচ্ছে তৈরি হয়ে যেতে পারে । এদের চেহারা, লেবাস এবং চমতকার উপস্থাপনা কৌশল দেখে  ভালোমানুষ মনে হলেও, আসলে তা মোটেই নয়। বরং মূল উদ্দেশ্য অন্যকে ঠকিয়ে, নিজে লাভবান হওয়া।

আসলে "কৃষি" কি ??
CAJ উত্তর : যারা কৃষি কাজ করেন বা কৃষির সঙ্গে জড়িত, তারা খুব ভালো করে জানেন যে, কৃষি কি বিষয় । আর তাই এসকল প্রলোভনে প্রকৃত কৃষক কম প্রলোভিত/ প্রতারিত হন । কৃষিতে আসার আগে আপনাকেও জানতে হবে , কৃষি কি  ? এটা কেমন পেশা ? কতোটা সহজ ? কতো বেশী লাভজনক ?
আপনি যেমন আপনার সন্তানকে আদর, যত্ন, মমতা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিল তিল করে বড় করে তুলছেন, কৃষি কাজ ঠিক তেমন । এখানে অভিজ্ঞতা, গভীর মনঃসংযোগ,কঠোর শ্রম, সময়, অর্থ, সততা যেমন প্রয়োজন, তেমনি ধৈর্য ধরে তিল তিল করে একে বড় করে তুলতে হয়। তারপরেও অনেক সময়ই প্রকৃতিক দুর্যোগ, বাজার ব্যবস্থাপনার সুব্যবস্থার অভাব, দালালদের দৌরাত্ব সহ নানাবিধ প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পরে ।

আমি কিন্ত কৃষি উদ্যোগতা হতে আপনাকে নিরুৎসাহিত করছি না, বরং সম্পৃক্ত হতে অনুরোধ করছি । কিন্তু সেটা বিভ্রান্ত হয়ে নয়,ভুল পথে নয় । আপনি জেনে, বুঝে তারপর শুরু করুন । কিন্ত সেটা কি ভাবে ??

চাষা আলামীন জুয়েল- CAJ সুপারিশ ----
প্রথমত : আপনি কৃষিকে ভালো বাসেন, তাই কৃষিকে পেশা হিসেবে নিতে মন স্থির করেছেন । এবং আপনার প্রয়োজনীয় অর্থ আছে । এ দুটি বিষয় আপনার প্রথম যোগ্যতা । এরপর আমার বা অন্যের কথায় মুগ্ধ হয়ে শুরু করে দিলেই আপনি সফল হবেন ? মোটেই এমনটি ভাবা কোন বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ হবে না । বরং সে ক্ষেত্রে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভবনাই বেশী ।

তাহলে আপনি কি করবেন ?
দ্বিতীয়ত:  কিছূ বিষয় সম্পর্কে আপনাকে আগেই জেনে নিতে হবে । যেমন - স্থির হয়ে ভেবে চিন্তে আপনাকেই খুজে বের করতে হবে, কৃষি সেক্টরের কোন কাজটি আপনার জন্য সহজ, কোন কৃষি কাজটি কম ঝুকি সম্পন্ন, কোন কৃষি পণ্যটির বাজার চাহিদা ভালো এবং আপনার বিপণন ব্যাবস্থার জন্য কোনটি সহজ হবে । এই ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে, বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নিন । সেটি সম্পন্ন হয়ে গেলে এবার সেই বিষয়ে অভিজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং কম - বেশী হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিন । "যুব উন্নয়ন"- উপজেলা,জেলা বা সাভার এর অফিস থেকে এসকল বিষয়ে আপনি প্রশিক্ষণ নিতে পারেন । আর সেটা সম্ভব না হলে, যেখানে প্রাইভেট খামার রয়েছে, সেখানে অনুমতি নিয়ে ২/৩ সপ্তাহ সেচ্ছা শ্রম দিন । তাহলে আপনি বাস্তব যে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, সেটা হয়ে উঠবে আপনার সব থেকে বড় পুঁজি । আর এবার আল্লাহর উপর ভরসা করে শুরু করুন । ইনশাল্লাহ, আপনি বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সফল হবেন ।

CAJ অনুরোধ : কারো মুখরোচক কথায়, ফাঁদে পরে বা প্রতারনার স্বীকার হয়ে নয়-- বরং নিজেকে প্রস্তুত করে কৃষি কাজে আসুন । তাতে আপনি যেমন লাভবান হবেন, তেমনি লাভবান হবে দেশ ।

#সকল নতুন কৃষি উদ্যোগতাদের স্বাগতম ও শুভ কামনায় -- চাষা আলামীন জুয়েল*

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...