সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
আমার সোনালী পালন ও বাস্তব অভিজ্ঞতা:---
ব্যক্তি জীবনে আমি ব্যর্থ একজন মানুষ, জীবনে ভালো বা মন্দ কোন কাজেরই সহজ সফলতা আমার ইতিহাসে নাই , টেনেটুনে জোড়াতালি দিয়ে কোনভাবে চলে যাচ্ছি. তারপরও মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে লাখো শুকরিয়া.

ব্রয়লার পালনে আমার অনীহা , তাই চাকুরী ছেড়ে বাড়ি এসে প্রথম মাত্র ৪০০ পিস সোনালী দিয়ে ফার্ম শুরু. ৬৫-৭০ দিনে ৩০০ পিস বিক্রয় করে দিলাম. দাম বেশ ভালো ছিলো , ২০৫ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রয় করেছি. আমার ডিলার বাচ্চা -খাদ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে বিক্রয় করা,সকল দায়িত্ব পালন করেছে. আমি অবশিষ্ট ১০০ মুরগী বিক্রয় করতে রাজী হলাম না . ডিলারকে বললাম, এগুলো থাক, দেখি লেয়ার হিসেবে পালন করে. ডিলার আমাকে নিরুত্সাহিত করলো এই বলে , লেয়ার হিসেবে পালন করে এথেকে লাভ হবেনা. যাহোক হাল ছাড়লাম না এই ভেবে যে , একশত মুরগীতে লোকসান হলেই বা কত হবে . আমি রেডীফিডের পাশাপশি একবেলা ধান খাওয়ানোর অভ্যাস করলাম. ১৩৮ দিনে ডিম দেয়া শুরু হলেও ছয়মাসে সর্বোচ্চ ৭৮% ডিম পেলাম. এখন বয়স আট মাস. ডিমের গড় প্রাপ্তি ৭৫% বহাল. প্রতি মুরগীর গড় ওজন ১৮০০ গ্রাম. হিসেব মিলিয়ে যা বুঝলাম, সেটা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি. উপকারে আসবে কিনা জানিনা.


প্রাপ্ত বয়সের একশত মুরগীকে আমি প্রতিদিন ৯ কেজি খাবার দেই. যার ৬ কেজি লেয়ার লেয়ার -১ এবং তিন কেজি ধান. খাবার খরচ হচ্ছে লেয়ার ৬x৩৩=১৯৮ টাকা. ধান ৩x২০=৬০ টাকা. মোট = ২৫৮ টাকা. ডিম পাচ্ছি ৭৫ পিস. পাইকারি মূল্য ৭৫x৭.৫= ৫৬২.৫০ টাকা. গড়ে একটা ডিম ভেঙে যায় . তাহলে দাম কমে দাড়ায় ৫৫৫ টাকা. খাবার খরচ বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ২৯৭ টাকা. মাংস হিসেবে এর বডির চাহিদা লেয়ার এর তুলনায় বেশী এবং দামেও বেশী. ঔষধ খরচ লেয়ারের তুলনায় কম. কারন লেয়ারের জাতগুলোর থেকে সোনালীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, শীত - গরম সহনশীলতা বেশী. উল্লেখ্য, সোনালী মুরগীর ডিম পাইকারী পর্যায় পর্যন্ত সোনালী থাকে,কিন্তু খুচরা বিক্রেতার কাছে গেলে এগুলো দেশী মুরগীর ডিম হয়ে যায় . এর ডিমের চেহারা,স্বাদ,গন্ধ দেশী মুরগীর ডিমের মতই.
তবে এই ডিম দেয়ার হার কতদিন বজায় থাকে এখন সেটাই দেখার বিষয়.

আপাদত আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, বাচ্চার মূল্যও ১৫ টাকা হওয়ায় নতুন করে ২১০০ বাচ্চা তুলেছি.আল্লাহর মেহেরবাণী থাকলে যেখান থেকে দুই মাস পরে বাছাই করে ১০০০ রেখে বাকিটা মাংস হিসেবে বিক্রয় করে দেয়ার নিয়ত করেছি. আরো একটা ঝুকি নাহয় নিয়েই দেখি.

#সকলে দোয়া করবেন. আপনাদের জন্যও রইলো আমার শুভকামনা ---চাষা আলামিন জুয়েল.

মন্তব্যসমূহ

Unknown বলেছেন…
অনেক দিন আগের পোস্ট হলেও পড়ে খুব ভাল লেগেছে এবং উৎসাহিত হয়েছি।আল্লাহ আপনার ভাল করুক।
আবদুর রহমান বলেছেন…
দয়া করে বলবেন যে,কিছু মুরগি বিক্রি করবো আর কিছু লেয়ার হিসেবে তাহলে ভ্যাকসিন কি একটাই না ভিন্ন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...