সঠিকভাবে পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি ---
পানি পরিচ্ছন্ন রাখা যতটা সহজ, বিশুদ্ধ করা ততটা সহজ নয়।
নানা রকম ময়লা ও রোগ জীবাণু মিশে পানিকে দূষিত করে। তাছাড়া পানিতে ভাসমান ময়লা, বিষাক্ত গ্যাস ও রোগজীবাণু সম্পুর্ণভাবে অপসারণ করা না গেলে বিশুদ্ধ করা সম্ভব নয়, আর দূষিত পানি পান এর মাধ্যমে বিভিন্ন পানি বাহিত রোগে আমরা আক্রান্ত হই , আক্রান্ত হয় আমাদের গবাদী পশু -খামার। এখন বর্ষা মৌসুম, পানিবাহী রোগের প্রাদুর্ভাব এসময়ে বেশী দেখা যায় । তাই এখনই আমাদের সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে।
পানি বিশুদ্ধকরণের নানা উপায়---
ফুটানো: ফুটিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা যায়। উচ্চতাপে ১০/২০ মিনিট পানি ভালোভাবে ফুটাতে হবে। ফলে পানিতে থাকা রোগজীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়, ধাতব লবণ থিতিয়ে পড়ে ও দ্রবীভূত গ্যাস বের হয়ে যায়।
পানির সর্বোচ্চ বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য ফুটানোর পরে ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে। ফিল্টার যদি না থাকে তাহলে পানি পান করার আগে কয়েক স্তর পুর বিশিষ্ট ছাঁকনি দিয়ে তা ছেঁকে নিতে হবে।
ছাঁকন পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে দরকার চারটি কলস বা মাটির চারি। চারি হচ্ছে মাটির তৈরি বড় পাত্র বা গামলা।
চারটি কলস বা চারি উপর নিচ করে সাজাতে হয়। প্রথমে কলসে সাধারণ পানি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় কলসে বালু ও তৃতীয় কলসে নুড়ি পাথর রাখতে হয়। বালি ও নুড়ি পাথরে পানি পরিশোধিত হয়ে চতুর্থ কলসে পড়ে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে এই পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করা হয়।
পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট: নানা রকম ট্যাবলেট ব্যবহার করে পানি বিশুদ্ধ করা যায়। এর মধ্যে হ্যালোজেন অতি পরিচিত ট্যাবলেট। প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি ট্যাবলেট গুলিয়ে রেখে দিলে এক ঘণ্টা পর তা থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়।
পটাশ: ২৪ লিটার পানিতে এক গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ছয় ঘণ্টা রেখে দিলে সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়।
ফিটকিরি: সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি পানিতে মিশিয়ে ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করে তা থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে পাত্রের উপর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হবে ও তলানি ফেলে দিতে হবে।
আয়োডিন: প্রতি লিটার পানিতে দুই শতাংশ আয়োডিনের দ্রবণ মিশিয়ে এত ঘণ্টা রেখে পানি বিশুদ্ধ করা যায়।
শহরে যে ট্যাপের পানি পাওয়া যায় তা মূলত ব্লিচিং ও ক্লোরিন দিয়ে পরিশোধিত করা হয়। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চুল পড়া ও ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। এছাড়াও যে হাঁড়িতে পানি ফুটানো হয় তার তলায় অনেক সময় শক্ত আস্তরণ পড়তে দেখা যায়, আর এটি ক্লোরিন ও ব্লিচিংয়ের জন্য হয়ে থাকে।
এই পদ্ধতিতে পরিশোধিত পানি ত্বক ও চুলের জন্য ক্ষতিকার হলেও শহরাঞ্চলের জন্য পানি বিশুদ্ধ করার অন্য কোনো সহজ উপায় নেই। তাই বলবো এই পানি ভালো ভাবে ফুটিয়ে ও ছেঁকে পান করার উচিত।
পানি সংরক্ষণ---যদি প্রাকৃতিক পানি সরাসরি সংরক্ষণ করতে হয় তবে যতটা সম্ভব সুর্যের আলো থেকে দূরে রাখতে হবে।
বৃষ্টির পানি: যেসব অঞ্চলে পানি সহজলভ্য নয়,সেখানে বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমা করে রাখা হয়। এক্ষেত্রে বৃষ্টি শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হবে। পরিষ্কার পাত্রে পানি সংগ্রহ করা উচিত। এই পানি বেশি দিন সংরক্ষণের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুর্যের আলো থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। পরে ব্যবহারের আগে তা ভালো মতো ছেঁকে ব্যবহার করা যাবে।
আর “ফুটানো পানির ক্ষেত্রে তা ভালো ভাবে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে মাটির পাত্রে বা কলসে সংরক্ষণ করলে অনেকদিন পর্যন্ত তা ভালো থাকে। প্লাস্টিক এর পাত্রে পানি রাখলে তার নিচে তলানি জমে ও পান করার অযোগ্য হয়ে যায়।
অনেক ব্যস্ততার ভিড়ে পানি বিশুদ্ধতার দিকে আলাদাভাবে নজর দেওয়া হয় না,তাই বিসিএসআইআর’য়ের উদ্ভাবিত রাসায়নিক পদার্থভিত্তিক ফিল্টার যা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বীকৃত এমন ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়াও বাজারে নানা রকমের টাইমার যুক্ত পানি পরিশোধক যন্ত্র পাওয়া যায়, তা ব্যবহারের মাধ্যমেও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়,এটি নিরাপদ ও ঝামেলা মুক্ত।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার -- প্রভাষক শারমিন সুলতানা।
#সকলের সু -সাস্থ্য কামনায় ---চাষা আলামীন জুয়েল.
পানি পরিচ্ছন্ন রাখা যতটা সহজ, বিশুদ্ধ করা ততটা সহজ নয়।
নানা রকম ময়লা ও রোগ জীবাণু মিশে পানিকে দূষিত করে। তাছাড়া পানিতে ভাসমান ময়লা, বিষাক্ত গ্যাস ও রোগজীবাণু সম্পুর্ণভাবে অপসারণ করা না গেলে বিশুদ্ধ করা সম্ভব নয়, আর দূষিত পানি পান এর মাধ্যমে বিভিন্ন পানি বাহিত রোগে আমরা আক্রান্ত হই , আক্রান্ত হয় আমাদের গবাদী পশু -খামার। এখন বর্ষা মৌসুম, পানিবাহী রোগের প্রাদুর্ভাব এসময়ে বেশী দেখা যায় । তাই এখনই আমাদের সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে।
পানি বিশুদ্ধকরণের নানা উপায়---
ফুটানো: ফুটিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা যায়। উচ্চতাপে ১০/২০ মিনিট পানি ভালোভাবে ফুটাতে হবে। ফলে পানিতে থাকা রোগজীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়, ধাতব লবণ থিতিয়ে পড়ে ও দ্রবীভূত গ্যাস বের হয়ে যায়।
পানির সর্বোচ্চ বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য ফুটানোর পরে ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে। ফিল্টার যদি না থাকে তাহলে পানি পান করার আগে কয়েক স্তর পুর বিশিষ্ট ছাঁকনি দিয়ে তা ছেঁকে নিতে হবে।
ছাঁকন পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে দরকার চারটি কলস বা মাটির চারি। চারি হচ্ছে মাটির তৈরি বড় পাত্র বা গামলা।
চারটি কলস বা চারি উপর নিচ করে সাজাতে হয়। প্রথমে কলসে সাধারণ পানি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় কলসে বালু ও তৃতীয় কলসে নুড়ি পাথর রাখতে হয়। বালি ও নুড়ি পাথরে পানি পরিশোধিত হয়ে চতুর্থ কলসে পড়ে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে এই পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করা হয়।
পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট: নানা রকম ট্যাবলেট ব্যবহার করে পানি বিশুদ্ধ করা যায়। এর মধ্যে হ্যালোজেন অতি পরিচিত ট্যাবলেট। প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি ট্যাবলেট গুলিয়ে রেখে দিলে এক ঘণ্টা পর তা থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়।
পটাশ: ২৪ লিটার পানিতে এক গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ছয় ঘণ্টা রেখে দিলে সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়।
ফিটকিরি: সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি পানিতে মিশিয়ে ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করে তা থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে পাত্রের উপর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হবে ও তলানি ফেলে দিতে হবে।
আয়োডিন: প্রতি লিটার পানিতে দুই শতাংশ আয়োডিনের দ্রবণ মিশিয়ে এত ঘণ্টা রেখে পানি বিশুদ্ধ করা যায়।
শহরে যে ট্যাপের পানি পাওয়া যায় তা মূলত ব্লিচিং ও ক্লোরিন দিয়ে পরিশোধিত করা হয়। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চুল পড়া ও ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। এছাড়াও যে হাঁড়িতে পানি ফুটানো হয় তার তলায় অনেক সময় শক্ত আস্তরণ পড়তে দেখা যায়, আর এটি ক্লোরিন ও ব্লিচিংয়ের জন্য হয়ে থাকে।
এই পদ্ধতিতে পরিশোধিত পানি ত্বক ও চুলের জন্য ক্ষতিকার হলেও শহরাঞ্চলের জন্য পানি বিশুদ্ধ করার অন্য কোনো সহজ উপায় নেই। তাই বলবো এই পানি ভালো ভাবে ফুটিয়ে ও ছেঁকে পান করার উচিত।
পানি সংরক্ষণ---যদি প্রাকৃতিক পানি সরাসরি সংরক্ষণ করতে হয় তবে যতটা সম্ভব সুর্যের আলো থেকে দূরে রাখতে হবে।
বৃষ্টির পানি: যেসব অঞ্চলে পানি সহজলভ্য নয়,সেখানে বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমা করে রাখা হয়। এক্ষেত্রে বৃষ্টি শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হবে। পরিষ্কার পাত্রে পানি সংগ্রহ করা উচিত। এই পানি বেশি দিন সংরক্ষণের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুর্যের আলো থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। পরে ব্যবহারের আগে তা ভালো মতো ছেঁকে ব্যবহার করা যাবে।
আর “ফুটানো পানির ক্ষেত্রে তা ভালো ভাবে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে মাটির পাত্রে বা কলসে সংরক্ষণ করলে অনেকদিন পর্যন্ত তা ভালো থাকে। প্লাস্টিক এর পাত্রে পানি রাখলে তার নিচে তলানি জমে ও পান করার অযোগ্য হয়ে যায়।
অনেক ব্যস্ততার ভিড়ে পানি বিশুদ্ধতার দিকে আলাদাভাবে নজর দেওয়া হয় না,তাই বিসিএসআইআর’য়ের উদ্ভাবিত রাসায়নিক পদার্থভিত্তিক ফিল্টার যা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বীকৃত এমন ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়াও বাজারে নানা রকমের টাইমার যুক্ত পানি পরিশোধক যন্ত্র পাওয়া যায়, তা ব্যবহারের মাধ্যমেও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়,এটি নিরাপদ ও ঝামেলা মুক্ত।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার -- প্রভাষক শারমিন সুলতানা।
#সকলের সু -সাস্থ্য কামনায় ---চাষা আলামীন জুয়েল.

মন্তব্যসমূহ