সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হাঁস পালন পদ্ধতি ----

হাঁস পালন পদ্ধতি ------

হাঁসের জাত সমুহ---

পিকিং / বেজিনঃ
উৎপত্তিঃ এ জাতের হাঁসের উৎপত্তি চীন দেশে।
বৈশিষ্ট্যঃ---১. পালকের রং সাদা। ২. ডিমের রং সাদা। ৩. দেহের আকার বড়।

উপযোগীতাঃ ইহা মাংসের জন্য প্রসিদ্ধ কারণ প্রাপ্ত বয়স্ক একটি হাঁসা প্রায় ৪.৫ কেজি এবং একটি হাঁসী ৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। বৎসরে গড়ে প্রায় ১৫০ টি ডিম দেয়।


মাসকোভিঃ
উৎপত্তিঃ এ জাতের হাঁসের আদি জন্মস্হান দক্ষিণ আমেরিকা।
বৈশিষ্ট্যঃ--১. পালকের রং সাদা ও কলো। ২. মাথায় লাল ঝুটি।
৩. ডিমের রং সাদা। ৪. দেহের আকার বড়।

উপযোগীতাঃ এ জাতের হাঁস মাংসের জন্য প্রসিদ্ধ কারণ প্রাপ্ত বয়স্ক একটি হাঁসা প্রায় ৫ কেজি এবং একটি হাঁসী ৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। বৎসরে গড়ে প্রায় ১২০ টি ডিম দেয়।

খাকী ক্যাম্পবেলঃ
উৎপত্তিঃইহার উৎপত্তিস্হল ইংল্যান্ড।
বৈশিষ্ট্যঃ---১. পালকের রং খাকী বিধায় খাকী ক্যাম্পবেল নামকরণ করা হয়েছে। ২. ডিমের রং সাদা। ৩. ঠোঁট নীলাভ/কালো।

উপযোগীতাঃ ডিম-এর উদ্দেশ্যে এ জাতের হাঁস পালন করা হয়। বার্ষিক ডিম উৎপাদন গড়ে ২৫০- ৩০০ টি। বয়ঃ প্রাপ্তদের ওজন ২- ২.৫ কেজি হয়ে থাকে।

জিনডিংঃ
উৎপত্তিঃ ইহার উৎপত্তিস্হল চীন।
বৈশিষ্ট্যঃ---১. হাঁসীর পালকের রং খাকীর মাঝে কালো ফোটা এবং হাঁসার কালো ও সাদা মিশ্রিত। ২. ডিমের রং নীলাভ। ৩. ঠোঁট নীলাভ/হলদে।

উপযোগীতাঃ ডিম এর উদ্দেশ্যে এ জাতের হাঁস পালন করা হয়। বার্ষিক ডিম উৎপাদন গড়ে ২৭০-৩২৫ টি। বয়ঃ প্রাপ্তদের ওজন ২- ২.৫ কেজি হয়ে থাকে।

হাঁস এর বাসস্হানের জন্য স্হান নির্বাচনঃ
১. উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে যেন বন্যার সময় পানিতে ডুবে না যায়।
২. বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের পর্যাপ্ত সুবিধা থাকতে হবে।
৩. ভালো যোগাযোগ ব্যবস্হা থাকতে হবে।
৪. মাংস ও ডিম বাজারজাত করার সুবিধা থাকতে হবে।
৫. পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্হা থাকতে হবে।
৬. পানি নিস্কাশনের ব্যবস্হা থাকতে হবে।
৭. চারপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে।
৮. খোলামেলা ও নিরিবিলি পরিবেশ হতে হবে।

ঘরের প্রকৃতিঃ
হাঁস পালনের উদ্দেশ্যের ওপর ভিত্তি করে এদের ঘর বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। যেমন- হ্যাচারি ঘর, বাচ্চার ঘর, গ্রোয়ার ঘর, ডিমপাড়া ঘর। যেমন- একচালা বা শেড টাইপ, দোচালা বা গ্যাবল টাইপ (‘অ ’ টাইপ), কম্বিনেশন টাইপ ও মনিটর বা সেমিমনিটর টাইপ। হাঁস পিছু কতটা জায়গা দিতে হবে--
বয়স্ক হাঁস পিছু ২ থেকে ৩ ব: ফু: জায়গা দিতে হবে।

ঘরের পরিচর্যা ও জীবাণুমুক্ত করণ পদ্ধতিঃ
ঘরের লিটার পরিস্কার হতে হবে এবং জীবাণুনাশক, যেমন- চুন দিয়ে তা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ঘরের দেয়াল-মেঝে ভালমত পানি দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। তবে কস্টিক সোডা দিয়ে পরিষ্কার করলে ভালো হয় । ফিউমিগেশন শুরু করার পূর্বে দরজা, জানালা, ভেন্টিলেটর প্রভৃতি বন্ধ করতে হবে যাতে ঘরে কোনো বাতাস না ঢুকে। ঘরের প্রতি ২.৮ ঘন মিটার জায়গার জন্য ৬ গ্রাম পটাসিয়াম পার-ম্যাঙ্গানেট ও ১২০ মি.লি. ফরমালিন (৪০%) দিয়ে ফিউমিগেট করতে হবে।

বাচ্চা পালন -----
বাচ্চা রাখার ঘর বা শেড অবশ্যই উঁচু জায়গায় (সমতল ভূমি হতে ১-১.৫ ফুট উচুঁ) নির্মাণ করতে হবে যেন ঘরের ভিটি কোন অবস্হায় ভিজা বা স্যাঁতস্যাঁতে না হয়। ঘরের মেঝে পাকা হলে ভাল হয়। ২-৩ ইঞ্চি পুরু করে ধানের শুকনো তুষ বা শুকনো কাঠের গুঁড়া মেঝের উপর বিছিয়ে দিতে হবে। মেঝে নিচ থেকে ভিজে উঠতে পারে সেজন্য প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ২/৩ বার লিটার উল্টিয়ে চুন মিশাতে হবে। এতে লিটার শুকনো থাকবে, জীবাণু ধংস হবে এবং দুর্গন্ধ দুর হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোনো অবস্হাতেই বৃষ্টির পানি ঘরের মেঝের উপর না পরে। এবং যেন পানির পাত্র হতে খাবার পানি ঘরের মেঝের উপর না পরে। কখনও লিটার ভিজে গেলে উহা ফেলে দিতে হবে এবং সাথে সাথে শুকনো লিটার দিতে হবে। বাচ্চা সংগ্রহের পর এদেরকে প্রথমে ভিটামিন মিশ্রিত পানি খেতে দিতে হবে।বাচ্চাদের ২-৩ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত প্রারম্ভিক খাদ্য, ৪-১৯ সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ন্ত এবং ২০ সপ্তাহের পর লেয়ার খাদ্য দিতে হয়। প্রতিটি বাচ্চা হাঁসকে ১ম সপ্তাহে ১০-২০ গ্রাম, ২য় সপ্তাহে ২১-৩১ গ্রাম, ৩য় সপ্তাহে ৩১-৪১ গ্রাম, ৪র্থ সপ্তাহে ৪১-৫৫ গ্রাম ও ৫ম সপ্তাহে ৫৫-৬৫ গ্রাম খাদ্য দিতে হয়। শুকনো খাবার সামান্য পানিতে ভিজিয়ে খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩/৪ বার বাচ্চাকে খাবার দিতে হবে এবং প্রতি বাচ্চাকে ৫-১০ গ্রাম করে সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে ছোট বাচ্চার বেলায় খাবার দেবার সময় অবশ্যই পানির পাত্রে আগে পানি দিয়ে রাখতে হবে অর্থাৎ প্রথমে পানি দিয়ে পরে খাবার দিতে হবে নতুবা শুকনো খাবার বাচ্চার গলায় আটকে বাচ্চা মারা যেতে পারে। এক দিন বয়সের বাচ্চার জন্য ব্রুডিং-এর প্রয়োজন রয়েছে। হাঁসের বাচ্চার জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা হচ্ছে- ১ম সপ্তাহে ৩২ সে., ২য় সপ্তাহে ২৯ সে., ৩য় সপ্তাহে ২৬ সে., ৪র্থ সপ্তাহে ২৩ সে., ও ৫ম সপ্তাহে ২১ সে. তাপমাত্রা প্রয়োজন। বাচ্চা ছাড়ার ৬ ঘণ্টা আগে ব্রুডারের তাপমাত্রা ঠিক করতে হবে। গরমকালে ৪ সপ্তাহ এবং শীতকালে ৫-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত হাঁসের বাচ্চাকে তাপ দিতে হয়। তবে অতি খরা অথবা অতি শীতে এর কিছুটা তারতম্য হতে পারে। বাংলাদেশের গ্রামের অনেক এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ নেই, থাকলেও পর্যাপ্ত নয়, সে সব এলাকার ক্ষুদ্র খামারী হ্যারিকেন, হ্যাজাকলাইট, কেরোসিন অথবা মাটির চুলা ব্যবহার করে হাঁস-মুরগির বাচ্চাগুলোকে তাপ প্রদানের ব্যবস্হা করতে পারেন।

হাঁস এর খাদ্য ও পুষ্টি ব্যবস্হাপনাঃ
হাঁসের খাদ্যঃ
হাঁস প্রধানত দুই রকমের খাদ্য খায়। যেমন- প্রাকৃতিক খাদ্য ও সম্পূরক খাদ্য।
পারিবারিকভাবে পালিত হাঁস জলাশয়ে এবং ক্ষেতখামারে চরে জীবন ধারন করতে পারে। কিন্তু উন্নত জাতের হাঁস পালনের ক্ষেত্রে বিশেষ যত্নবান হতে হবে। সে ক্ষেত্রে সম্পুরক খাদ্য কমপক্ষে ৩ বার দিতে হবে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক খাবার যেমন - শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়া, কেঁচো, শাপলা, ক্ষুদেপানা, ছোট মাছ ও নানা ধরনের কীটপতঙ্গ মুক্ত অবস্হায় জলাশয়ে পাওয়া গেলে শুধু সকাল ও বিকালে পরিমিত পরিমান দানাদার খাবার সরবরাহ করলেই চলবে। হাঁসের খাবারের সাথে প্রচুর পরিমাণ পানি সরবরাহ করতে হয়। হাঁসকে শুস্ক খাদ্য দেয়া ঠিক নয়। এদের সবসময় ভেজা ও গুঁড়ো খাদ্য দেয়া উচিত। প্রথমে ৮ সপ্তাহ হাঁসকে ইচ্ছামত খেতে দেয়া উচিত পরবর্তীতে দিনে দু’বার খেতে দিলেই চলে ।

সুষম খাদ্য তৈরিঃ
১ সপ্তাহ থেকে ৩ সপ্তাহ বয়সের হাঁসদের খাবারে থাকবে আমিষ- ১৯.৫%, স্নেহপদার্থ- ৪.৫%, তাপ বা শক্তির জন্য আঁশ ওলা খাবার দিতে হবে- ৪.৮%, ক্যালসিয়াম- ১.৭%, ফসপরাস- ০.৮৬% । তিন সপ্তাহের থেকে বড় হাঁসদের খাবারে আমিষ শতকরা ১৭ ভাগ হলে চলবে। তিল এবং বাদাম ছাড়া অন্য কোন খোসা জাতীয় খাবার হাঁসকে দেওয়া উচিত নয়।সুষম খাদ্য তৈরির পূর্বে প্রতিটি হাঁস পালনকারীকে খোয়াল রাখতে হবে যেন সুষম খাদ্যের প্রতিটি উপাদানই সহজলভ্য, সস্তা, টাটকা এবং পুষ্টিমান সঠিকভাবে বিদ্যমান আছে। কোনো অবস্হাতেই বাসি পঁচা বা নিম্নমানের ফাংগাসযুক্ত খাবার হাঁসকে দেয়া যাবে না। খাদ্যের প্রকৃতি, মিশ্রণ পদ্ধতি, হাঁসের জাত, ওজন, ডিম উৎপাদনের হার এবং সর্বোপরি শামুক, ঝিনুক, ধান, সবুজ শেওলা বা শৈবাল এবং শাকসবজীর প্রাপ্যতা অনুসারে খাদ্য খাওয়ানোর কর্মসূচি তৈরি করতে হবে।

নিচে হাঁসের সুষম খাদ্য তৈরির খাদ্য উপাদান উল্লেখ করা হলো :

খাদ্যউপাদান---- বাচ্চার খাদ্য(গ্রাম)-- পূর্ণবয়স্ক হাসের খাদ্য (গ্রাম)
ভাঙা গম---------- ৪৫০----------------- ৪৫০
চালের কুঁড়া-------২৭০------------------৩০০
তিলের খৈল-------১৪০------------------১২০
শুঁটকী মাছের গুঁড়া-১২০-----------------১০০
ঝিনুক চূণ---------১৫--------------------২৫
লবণ----------------৫----------------------৫
_______________________________________
মোট = ১০০০ গ্রাম বা ১ কেজি।

ভিটামিন মিনারেল বাচ্চার জন্য ১.৫ গ্রাম ও বয়স্ক হাসের জন্য ২.০ গ্রাম প্রতি কেজি খাবারে সংযুক্ত করা যেতে পারে।

খাবার পাত্র ও পানির পাত্রঃ
বয়স অনুযায়ী হাঁসের জন্য খাবার পাত্র ও পানির পাত্রের পরিমাণ-
বয়স ------------------ জায়গার পরিমাণ ----- খাবার পাত্র ------- পানির পাত্র
১ দিন -৩ সপ্তাহ--------২.০ বর্গ ফুট-----------২.৫ সেমি----------২.৫ সেমি
৪ সপ্তাহ - ৮ সপ্তাহ-----৩.০ ------------------ ৩.০ ----------------৪.০
৮ সপ্তাহ - ১৬ সপ্তাহ----৪.০-------------------৪.০ ----------------৫.০

খামার ব্যবস্হাপনা ও দৈনিক কার্যক্রম সূচিঃ
যে কোনো ধরনের খামারই হোক না কেনো তার ব্যবস্হাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, প্রকৃতপক্ষে খামার ব্যবস্হাপনার উপরই খামারের লাভ লোকসান এমনকি খামারের ভবিষ্যত সসপ্রসারণ নির্ভর করে ।

সকাল ৭ - ৯ টাঃ
১. জীবাণুমুক্ত অবস্হায় শেডে প্রবেশ করতে হবে এবং হাঁস-মুরগির সার্বিক অবস্হা ও আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।
২. মৃত বাচ্চা/বাড়ন- বাচ্চা/মুরগি থাকলে তৎক্ষণাৎ অপসারণ করতে হবে।
৩. ডিম পাড়া বাসার দরজা খুলে দিতে হবে।
৪. পানির পাত্র/ খাবার পাত্র পরিস্কার করতে হবে।
৫. পাত্রে খাবার ও পানি না থাকলে তা পরিস্কার করে খাদ্য ও পানি সরবরাহ করতে হবে।
৬. লিটারের অবস্হা পরীক্ষা করতে হবে ও প্রয়োজন হলে পরিচর্যা করতে হবে।
৭. খাবার দেবার পর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।
সকাল ১১- ১২ টাঃ
১. খাদ্য নাড়াচাড়া করে দিতে হবে।
২. পানি গরম ও ময়লা হলে পরিবর্তন করে পরিস্কার ও ঠান্ডা পানি দিতে হবে।
৩. ডিম সংগ্রহ করতে হবে।
বিকাল ৪ - ৫ টাঃ
১. পাত্রে খাদ্য পানি না থাকলে তা সরবরাহ করতে হবে।
২. ডিম সংগ্রহ করতে হবে।
৩. ডিম পাড়ার বাসা/বাক্সের দরজা বন্ধ করতে হবে।
৪. আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।

সাপ্তাহিক কাজঃ
১. খাদ্য তৈরি করতে হবে।
২. বাচ্চা/ডেকী মুরগী/মুরগীর নমুনা ওজন গ্রহণ করতে হবে।
৩. ঘর পরিস্কার করতে হবে।
৪. ঘরের বাতি সপ্তাহে ২ দিন পরিস্কার করতে হবে। খাদ্য ও পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে এবং লিটার পরিচর্যা করতে হবে।

রোগ-বালাইঃ

হাঁসের প্লেগ রোগ-----প্লেগ হাঁসের একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এ রোগকে ডাক ভাইরাস এন্টারাইটিসও বলা হয়। ১৯২৩ সালে বাউডেট নামক জনৈক বিজ্ঞানী নেদারল্যান্ডে হাঁসের মরক হিসেবে রোগটি প্রথম সনাক্ত করেন। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই হাঁসের প্লেগ রোগ দেখা যায়। প্রাকৃতিক নিয়মেই সব বয়সী গৃহপালিত ও বন্যহাঁস, রাজহংসী এই ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল। আক্রান্ত পাখির সংস্পর্শে, দূষিত খাদ্যদ্রব্য ও পানির সাহায্যে সুস্থ পাখিতে এ রোগের ভাইরাস সংক্রমিত হয়। আমাদের দেশে হাট-বাজারে রুগ্ন হাঁস কেনা-বেচার মাধ্যমে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় এ রোগটি ছড়ায়। আবার কীট-পতঙ্গের মাধ্যমেও এ রোগের জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। তবে ডিমের মাধ্যমে রোগের সংক্রমই হয় না।

প্লেগ রোগের লক্ষণঃ
আক্রান্ত হাঁসের ক্ষুধা কমে যায় কিন্তু বার বার পানি পান করে। চোখ ও নাক দিয়ে তরল পদার্থ নিঃসৃত হয়। আলো দেখলে ভয় পায়। চোখের ঝিল্লির প্রদাহের কারণে চোখ বন্ধ করে রাখে। ডিম পাড়া হাঁসের ডিম দেয়া কমে যায়। মাথা নিচু করে রাখে। চলাফেরায় অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। আক্রান্ত পাখিতে ডায়রিয়া হয়। পাতলা পায়খানা লেজের আশে পাশে লেগে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হাঁসের হঠাৎ করে মৃত্যু হয়। এ রোগে ভাল সাস্থ্যের অধিকারী বয়স্ক হাঁসেরও মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুহার ৫ থেকে ১০০% হয়ে থাকে।

চিকিত্সা হিসেবে রোগাক্রান্ত হাঁসের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটিরিয়ার সংক্রামণ থেকে রক্ষা করার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিক যেমন- এনরোফ্লক্সাসিন, নরফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদির যেকোনো একটি দিয়ে চিকিত্সা করা যেতে পারে। ভাইরাসজনিত রোগের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিত্সা নেই। তাই রোগ যাতে না হয় সে জন্য হাঁসকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

ডাক কলেরাঃ
কারন---- ব্যক্টেরিয়া জনিত।
লক্ষনঃ-তরল পায়খানা হবে। ঘনঘন পায়খানা হবে। মৃত্যু হার ৮০-৯০ ভাগ।

প্রতিরোধ--- ডাক কলেরার ভ্যাকসিন দিতে হবে।

টীকা চক্রঃ
ডাক প্লেগ--- প্রথম ডোজ ২১-২৫ দিন বয়সে। ২য় ডোজ প্রথম ডোজ দেয়ার ১৫ দিন পরে।পরবরতিতে প্রতি ৫ মাস অন্তর নিয়মিত দিতে হবে।
ডাক কলেরা----প্রথম ডোজ ৪৫ দিন বয়সে। ২য় ডোজ প্রথম ডোজ দেয়ার ১৫ দিন পর। পরবরতিতে প্রতি ৬ মাস অন্তর টীকা দিতে হবে।

#আমাদের রয়েছে এক বিশাল শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী। লেখাপড়া শেষ করে চাকুরীর আশায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধরনা দিয়ে এখন বিরক্ত। সে সকল বেকার ভাই- বন্ধুরকে আমি আমন্ত্রন জানাই। হতাশ না হয়ে, বসে না থেকে আসুন, প্রথমে অল্প দিয়ে শুরু করুন। খামার পদ্ধতি বা সঠিক নিয়ম মেনে ২০০-৩০০ হাঁস দিয়ে একটি খামার শুরু করুন। আল্লাহ্‌র রহমতে ৬-৭ মাস পরে আপনার আয়ের রাস্তা খুলে যাবে।

বাচ্চা কোথায় পাবেন  ??
এজন্য রয়েছে সরকারী হ্যাচারি। সেখানে মান সম্মত বাচ্চা উৎপাদন করা হয়।
* নারায়নগঞ্জ -- ফজলুল হক – ০১৭১২০৪৪৮৬২।
* কেন্দ্রীয় হাঁস প্রজনন খামার, দৌলতপুর, খুলনা ।
* ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার পশ্চিম বাজারে অবস্থিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার- মুজিবুল - ০১৭১১০০৯২৮৯ ।
* নওগাঁ জেলার আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার, গ্রাম-নতুন সাহাপুর, সদর উপজেলা, নওগাঁ। হামিদ -০১৭১১১৮৪২৩৫
** বেকারত্ব নয়, নিজেই হবো উদ্যোগতা। এই প্রত্যয় নিয়ে তরুণদের হাত ধরে এগিয়ে যাক চাষা মজুরের বাংলাদেশ ।

#সকলের জন্য শুভ কামনায় ---- চাষা আলামীন জুয়েল **

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা:,

সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের পঞ্জিকা- - আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছ’টি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়। চাষিরা নিজস্ব চিন্তা ধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন।  ক্লিক করুন: বেগুন চাষ পদ্ধতি : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/caj.html পশু পাখি ও তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় : https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post.html https://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com/2020/01/blog-post_22.html বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল-মধ্য মে): লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন এর উত্তম সময় . সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চারা রোপণ করতে হবে । মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন করতে হবে . কুমড়া জাতীয় সব...

পরিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায় :

পারিবারিক খামারে দেশী জাতের মুরগী পালনের লাভজনক উপায়ঃ--- আমাদের গ্রামীণ জনপদে আগে বেশীরভাগ ঘরে দেশী মুরগী পালন করা হতো। রাত-বিরাতে বাড়ীতে অতিথি এলে এই মুরগী জবাই করে আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হতো। এমনকি মাঝে মাঝে গভীর রাতেও মুরগীর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যেতো। পরে জানতে পারতাম, মেহমান এসেছে তাই রাতেই মুরগী জবেহ করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাতে তো দুরের কথা, দিনের বেলাতে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ালেও দেশী মুরগী খুব বেশী পাওয়া যাবে না। কারন আজ আর গ্রামীণ জনপদের মানুষ দেশী মুরগী আগের মত পালন করে না। কিন্তু এর কারন কি ? কেন মানুষ দেশী জাতের মুরগী পালন করছে না ? কি এর প্রতিবন্ধকতা ? কেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশী জাতের মুরগী ? সকলের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত কামনা করছি। এবং আপনাদের আলোচনা ও মতামতের আলোকে পরবর্তীতে দেশী জাতের মুরগী নিয়ে কিছু লেখার আশা করছি------- #উপরোল্লিখিত আহ্বানটি জানাই,আলোচনা/ মতামত গ্রহনের জন্য গত ২৫/০৭/২০১৬ ইং তারিখে। যাতে করে প্রকৃত কারন গুলো খুঁজে বের করে একটি ফলপ্রসূ সমাধান দেয়া যায় এবং দেশী মুরগী সফল ভাবে পালনে আবার সকলকে আগ্রহী করে তোলা যায়। আলহামদুলিল্লাহ্‌, অভুতপূর্ব সারা ...

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :

পোল্ট্রি খামারি বন্ধুদের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : #মুরগীর রানীক্ষেত ঠেকাতে কি করবো ---? CAJউত্তর : প্রতিষেধক : বাচ্চাদের ৫-৭ দিন বয়সে বিসিআরডিবি টিকা চোখে ফোঁটা আকারে দিতে হবে। ২১ দিন বয়সে এবং ৬ মাসের বড় মোরগ-মুরগির জন্য আরডিভি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। ১০০ মুরগির জন্য ১ টি ভায়াল যথেষ্ট। চিকিতসা : অক্সি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ যেমন : রেনামাইসিন, বেক্টিট্যাব, টেট্রাভেট, টেকনোমাইসিন ডিএস যেকোনো একটি ট্যাবলেট ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ টি মুরগিকে ৩ দিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। #মুরগির ই করাইজা (ঠান্ডা রোগ) হলে কী করবো--? CAJউত্তর : ঘরের ভেতর স্যাঁতস্যাতে ভাব দূর করতে হবে, আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, লিটার সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্সিসাইক্সিন : ১ গ্রাম ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং Ciprotrojin পাউডার: ১ লিটারে পানিতে ১ গ্রাম পরিমাণে ৫ দিন ধরে দিতে হবে। #মুরগির কলেরা হয়েছে (জ্বর থাকে,  প্রথম দিকে সবুজ ও সাদা পাতলা পায়খানা করে), কী করতে হবে--? CAJউত্তর: প্রথমত আক্রান্ত মুরগিকে দ্রুত আলাদা করে ...